আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক এর কাছে চাওয়া ব্যাখা দিয়েছেন। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে নারায়ণগঞ্জে আদালত প্রাঙ্গনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে লিখিত ব্যাখা প্রার্থীর প্রতিনিধি ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মুন্না খান জমা দিয়েছেন।
প্রতিনিধি সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি শেখ আনিসুজ্জামানের দপ্তরে ব্যাখা জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের পেশকার ইবনে সাউদ।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মিছিলে প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলের জন্য নড়াইল জেলা প্রশাসককে সুপারিশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্বাক্ষরিত একটি সুপারিশপত্র নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাহমুদুল হক বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স নড়াইল জেলা থেকে ইস্যু করা। এই কারণে নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
সুপারিশপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য যাওয়ার সময় কাঞ্চন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির গানম্যান মো. আশিকুজ্জামানের নামে নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি হতে ইস্যুকৃত শটগান নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে অস্ত্রটি উচিয়ে প্রার্থীর পক্ষে শ্লোগান দেওয়ায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্সটি বাতিল ও আগ্নেয়াস্ত্রটি সরকার বরাবর জব্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সুপারিশ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় গোলাম দস্তগীর গাজীর মিছিলে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেন তাঁর অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুল কলির গানম্যান আশিকুজ্জামান। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অস্ত্রটি ও অস্ত্রের বিপরীতে লাইসেন্সটি জব্দ করে পুলিশ।
পরে ৩০ নভেম্বর মন্ত্রী গাজীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী জজ শেখ আনিসুজ্জামান। এই বিচারক গোলাম দস্তগী কিংবা তার প্রতিনিধিকে তাঁর কার্যালয়ে শুক্রবার সকালে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, গত ২৯ নভেম্বর দুপুরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী সশস্ত্র কর্মীসহ মিছিল নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যা নির্বাচন আচরণবিধিমাল ২০০৮ এর ৬(ঘ), ৮(ক) ও (খ), ১১(ঘ) এবং ১২ এর গুরুতর লঙ্ঘণ।