পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের ক্রোক ও সিলগালা করা রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিংয়ে সেই বাংলো বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ তল্লাশি অভিযানে উল্লেখযোগ্য বা অবৈধ কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও দুদকের কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শফিকুল আলমের নেতৃত্বে দুদক, উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা বাড়ির ভেতরে ঢুকে যৌথভাবে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মঈনুল হাসান রওশন, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহসান মাহমুদ রাসেল এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সীমন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাড়ির নিচতলা ও ওপরের তলার প্রতিটি কক্ষে প্রবেশ করে তল্লাশি করেন তারা। তবে তাদের অভিযানের সময় বাড়ির ভেতরে কোনো গণমাধ্যমকর্মী বা স্থানীয় লোকজনদের কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। অভিযান শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শফিকুল আলম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, পুরো বাড়ি তল্লাশি করে একটি পরিবারের ব্যবহারের জন্য যেসব আসবাবপত্র থাকা প্রয়োজন সে ধরনের জিনিসপত্র ও রান্নাঘরের সামগ্রি পাওয়া গেছে। যা খুবই সাধারণ মানের। বিলাসবহুল কোনো কিছুই পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মঈনুল হাসান রওশন জানান, তল্লাশি করে যা যা পাওয়া গেছে সেগুলোর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই আদালতে সেই তালিকাটি উপস্থাপন করা হবে। আদালতের পরবর্তী আদেশ অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম চলবে।
প্রসঙ্গত: পূর্বাচল উপশহর নিকটবর্তী রূপগঞ্জ উপজেলার গুতিয়াবো এলাকায় আনন্দ হাউজিং সোসাইটি নামে আবাসন প্রকল্পে ২০২১ সালে ২৪ কাঠা (৩৯.৬০ শতাংশ) জমির ওপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই তলা ডুপ্লেক্স বাড়িটি নির্মাণ করেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। এরপর থেকে দৃষ্টিনন্দন ও বিলাসবহুল এই বাড়িটিতে নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন তিনি। ইউরোপ কিংবা উন্নত রাষ্ট্রের বাড়ির আদলে নির্মিত এ বাংলো বাড়িতে বেনজীর আহমেদ কখনও পরিবার নিয়ে, আবার কখনও অতিথিদের নিয়েও আসা যাওয়া করতেন।
দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত গত ১২ জুন বেনজির আহমেদের এ বাড়িটি ক্রোক করার আদেশ দেন। সেই আদেশের ভিত্তিতে ৬ জুলাই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা ভূমি অফিসের সহযোগিতায় বাড়িটি জব্দের পর সিলগালা করে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন।