বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমল মানেই দুর্ভিক্ষ। ৭৪’র সময় কয়েক লক্ষ মানুষ না খেয়ে দুর্ভিক্ষে মারা গেছে। আওয়ামী লীগের আমল মানেই গুম-খুন। তারা আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। কিন্তু বিচার পাই নাই। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এবং আগস্টের ৫ তারিখ পর্যন্ত মাত্র বিশ দিনে তারা দুই হাজারের উপরে মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ মানেই হত্যা, জমি দখল, ব্যাংক দখল এবং লুটপাট। তাদের এমন কোন এমপি-মন্ত্রী নাই, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার না করেছে। এসমস্ত টাকা হলো জনগণের টাকা। তারা নানা উছিলায় পেয়াজ, আলু, চাল, তেলের দাম সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দিতো। এভাবে প্রধানন্ত্রী (শেখ হাসিনা) এবং তার আত্মীয়-স্বজনের একাউন্টে চলে যেত। এ ধরনের স্বৈরশ্বাসক জনগণ আর দেখতে চায় না।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ২নং ঢাকেশ্বরী এলাকায় নেতা-কর্মী কর্তৃক এক সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে এসে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন। এসময় নাসিক ১ থেকে ১০নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘একটি গোষ্ঠি নারায়ণগঞ্জকে কলঙ্কিত করেছে। বাংলাদেশের অন্য জেলার মানুষ এই নারায়ণগঞ্জকে চিনতো সন্ত্রাসের জনপদ, অশান্তির জনপদ হিসেবে। এখানে শুধু মারামারি হানাহানি এবং কাঁটাকাঁটি হয়, এই নারায়ণগঞ্জে সেভেন মার্ডার হয়, ট্রিপল মার্ডার হয়, ত্বকী মার্ডার হয়, চঞ্চল-মিঠুদের মত নেতারা মৃত্যুবরণ করে, অসংখ্য নিরীহ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু বিচার হয় না।’
নিজ দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন। জনগণকে সঙ্গে রাখবেন, আমরা পালিয়ে যেতে চাই না। যে দায়িত্ব পেয়েছি, তা কোন মজার বিষয় নয়। কোন ভোগের বিষয় নয়, ক্ষমতা দেখানোর বিষয় নয়। এ দায়িত্ব কঠিন দায়িত্ব। জনগণের বিপক্ষে যায় এমন কোন কাজ আপনারা করবেন না। আমাদের নেতৃত্বের মূল লক্ষ্য জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা। গত পনের বছরে জনগণ একটি মুহুর্তের জন্য স্বস্তি পায় নাই, শান্তি পায় নাই। জনগণ যেন গণতান্ত্রিক উপায়ে নিশ্বাঃস নিতে পারে। তারা যেন বুক ফুলিয়ে চলতে পারে। এমন একটি পরিবেশ তৈরি করাই বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য। আমাদের দলে কোন লুটেরা নাই, কোন গডফাদার নাই। কোন গডফাদারের জন্ম হওয়ার সুযোগও নাই। আমি আপনি যত বড়ই নেতা হই, আমাদের দিকে জনগণের দৃষ্টি রয়েছে। কাজেই অন্যায় করে কেউ পার পাবে না। যারা জনগণের বাড়ি-ঘর দখল করেছে, জনগণ তাদের বাড়ি-ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে। মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। আমরা জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিলে জনগণ আমাদেরও বাড়িঘর গুড়িয়ে দিবে।
মামুন মাহমুদ বলেন, বিগত পনের বছরে যে সরকার ছিল সে সরকার জনগণের নির্বাচিত ছিল না। তারা জনগণকে সঙ্গে রাখে নাই। তারা শুধু একটা গোষ্ঠি তৈরি করেছে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র এবং একনায়কতন্ত্র কায়েম করার জন্য। একজন মানুষেরও মৌলিক অধিকার কিংবা স্বাধীনতা ছিল না। আমরা সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছি। আমরা জনগণকে সঙ্গে রেখেছি, পাশে থেকেছি। জনগণকে রেখে আমরা পালিয়ে যাই নাই। যারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল, আজকে দেখেন তাদের পরিনতি কি হয়েছে। জনগণকে সঙ্গে না রাখলে কী পরিনতি হয়, ৫ই আগস্ট আপনারা দেখতে পেয়েছেন।