সিদ্ধিরগঞ্জে মিতালী মার্কেটের মালিকানা নিয়ে প্রায়ই ঘটছে সংঘর্ষ। পতিত সরকারের আমলে এই মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ ছিলো থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়ার কাছে। ৫ আগস্টের পর কয়েক দফা এই মার্কেটে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকটি পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ গভীর রাতে এই মার্কেটের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঘটেছে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক শতাংশ জায়গায় মিতালী মার্কেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি টিনশেড থেকে পাকা ভবনে নির্মাণ কাজ চলমান। হামলার কারণে সামনের দিকের অধিকাংশ ইট-কংক্রিট ভেঙে নিচে পড়ে আছে। মার্কেটের মুসল্লীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় ত্রিশ বছর যাবৎ টিনশেড মসজিদটিতে মুসল্লীরা নামাজ আদায় করে আসছিল। ইতিমধ্যে মসজিদের বেড়া ও টিন পুরোনো হয়ে জরাজ্বীর্ণ অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাই মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী মুসল্লীরা ওয়াক্ফা করা মসজিদটি সংস্কার করে পাকা ভবনে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এদিকে আব্দুল কাদের, শহিদুল্লাহ, ইয়াছিন, সাত্তার নামে ব্যক্তিরা উক্ত জমি নিজেদের বলে দাবি করছে।
কারা এই মসজিদ ভাঙ্গচুর করেছে তার কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ কারো কাছে নেই। তবে এ ঘটনায় জমির মালিকানা দাবিকারীরা জড়িত বলে অভিযোগ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির। এ বিষয়ে মিতালী মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমির হোসেন বাদশা বলেন, এখানে বর্ষাকালে পানি জমে। মাটি ভরাট করে আমরা মার্কেটের মুসল্লীরা মিলে মসজিদ পাকাকরণের উদ্দেশ্যে সংস্কার কাজ শুরু করি। এরপর থেকে ওয়াক্ফা করা এই মসজিদের জমির মালিকানা দাবি করছে ৫টি গ্রুপ। তাদেরকে কাগজপত্র দেখাতে বললে কেউ কাগজ দেখাতে পারছে না। অন্যদিকে গত ১৩ জানুয়ারি মার্কেটের ব্যবসায়ীক বিষয় নিয়ে কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী আমাদের উপর হামলা করেছিল। মসজিদের জমির মালিকানা দাবিকারীরা ওই সন্ত্রাসীদের দ্বারাই রাতের আধারে মসজিদে হামলার মত এমন ঘৃণ্য কাজ পরিচালিত করেছে বলে আমরা মনে করছি।
এদিকে মসজিদের জমির মালিকানা দাবি করে আব্দুল কাদের বলেন, বর্তমান ব্যবসায়ী সমিতি ও ব্যবসায়ীরা মসজিদ সংস্কারের কাজ করছে। আমাদেরকে তারা জানায়নি। উক্ত জায়গা আমাদের ব্যক্তিগত। এই জায়গা আমরা মসজিদের জন্য ওয়াক্ফা করিনি। এই জমিটি দখল করার জন্য বিগত সময়ে একেকজন একেকভাবে কাগজ তৈরি করেছে। মসজিদের নামে উক্ত জায়গাটি দখল করার পরিকল্পনা করেছে পূর্বে মার্কেটের দায়িত্বরতরা। মসজিদে হামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিনুর আলম জানান, মসজিদে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মুসল্লীরা অবরোধ করে। ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। পরবর্তীতে তাদেরকে মসজিদে হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।