নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের রসুলবাগ এলাকায় দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতক্ষ্যদর্শী ও এলাকাবাসীরা জানান, রসূলবাগ এলাকার আনমুন প্যাকেজিং নামে একটি কারখানার মালামাল বিক্রি করে গাড়িতে লোড করার সময় রসুলবাগ এলাকার রিয়াজ উদ্দিন, স্বপন মিয়া ও গিয়াস উদ্দিন পাঁচলাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ওই মালভর্তি ট্রাক আটকে রাখেন তারা। আদমজী এম ডব্লিউ স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ রোধে থানা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনসহ বিএনপির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দরা। চাঁদা দাবির সংবাদ পেয়ে আকবর হোসেন সন্ধ্যায় কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে রসূলবাগ এলাকায় আসার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকার সন্ত্রাসী রিয়াজ উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে কিশোরগ্যাং নেতা স্বপন মিয়া, আনিস মিয়াসহ ৫০/৬০জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনের মাথায় আঘাত করে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। একই সময় সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেন মনা, আল আমিন মিয়া, হানিফ মিয়া ও রুদ্র মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মভাবে আহত করে। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড প্রো-এ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন ও রুদ্র মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিন নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক আহত আল-আমিন মিয়া জানান, আনমুন প্যাকেজিং নামে একটি ফ্যাক্টরির পুরোনো মালামাল নেয়ার সময় মালিকের কাছে সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে। খবর পেয়ে আমরা রসুলবাগ এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। আমাদেরকে মারাত্মক আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় এলাকাবাসীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীরা এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোরগ্যাং নেতা হিসেবে পরিচিত। আমরা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
আহত মনোয়ার হোসেন মনা জানান, আনমুন প্যাকেজিংয়ের মালামাল বের করার সময় তারা চাঁদা দাবি করে। খবর পেয়ে আমরা এলাকায় আসলে সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতা আকবরসহ আমাদের হত্যা করতে আমাদের উপর আক্রমন চালায়। তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবেই আমাদের উপর আক্রমন করেছেন। চাঁদাবাজদের প্রতিহত করতে গিয়েই আমাদের প্রিয় নেতা আকবর হোসেন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
এ বিষয়ে রিয়াজ মিয়া, স্বপন মিয়া ও গিয়াস উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন জানান, থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনসহ কয়েকজনের উপর হামলা করে আহত করার ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছি। খুব শিগ্রই আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।