নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসছে চলতি মাসের মধ্যেই। আর সেই লক্ষ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্য খসড়া কমিটি প্রস্তুত করে দ্রুত সময়ের তা কেন্দ্রে জমা দিতে নির্দেশনায় দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনকে।
ইতিমধ্যে মধ্যেই খসড়া কমিটি প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য কমিটির তালিকা কেন্দ্রের কাছে জমা দেবেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আর সেই লক্ষ্যেই চলছে খসড়া কমিটি প্রস্তুতের জন্য কাজ করছে তারা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে চূড়ান্ত ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট খসড়া কমিটির তালিকা প্রস্তুত করে তা চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রে জমা দিবেন এমনটাই জানাগেছে জেলা বিএনপির সূত্রে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদেরকে জেলা বিএনপি’র ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া কমিটি প্রস্তুতি করে তা কেন্দ্রে জমা দিতে বলা হয়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ একটি খসড়া কমিটির তালিকা প্রস্তুত করে তা কেন্দ্রে জমা দিবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের খসড়া কমিটি কেন্দ্র যাচাই-বাছাইয়ের পর অনুমোদন দিবে। তবে আমি আশা করছি চলতি মাসের মধ্যেই জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন আসবে।
এবারের নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কমিটিতে আসতে যাচ্ছেন অনেক নতুন মুখ। আবার পুরাতন নেতারাও থাকছেন কমিটিতে। ফলে নবীন- প্রবীণের মিশেলেই জেলা বিএনপি’র কমিটি হতে যাচ্ছে। আর এই কমিটি আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
দলীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়- জেলা বিএনপি’র কমিটি গঠন হবে প্রবীণ-নবীনের মিশেলে। যারা মামলায় জর্জরিত হয়েছেন, অতীতে রাজপথে ছিলেন তাদের ঠাঁই দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আগামীতে যারা রাজপথে আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকতে পারবেন তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যকে প্রধান্য দিয়ে এবার কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এবং কোনো গ্রুপ বা লবিং ভিত্তিক নয়, নির্মূহভাবে জেলা বিএনপি’র স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এবং এই কমিটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের কাছে জমা দিতে দেয়া হবে। আর চলতি মাসেই অনুমোদন আসবে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
সূত্র আরও জানায়- নতুন ফরম্যাটে আসছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র পুর্ণাঙ্গ কমিটি। কেন্দ্রের নির্দেশক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমন্বয় করে নতুনভাবেই সাজাচ্ছেন জেলা বিএনপির কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। নেয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ। এতে কমিটিতে আসতে পারে নতুন মুখরাও। তবে- গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদ নিয়ে এখনো চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এতে আছে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করা কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপও। সিনিয়র সহ-সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক নেতার নাম শোনা যাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু।
আর সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা মাশুকুল ইসলাম রাজিব, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু।
এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির সাবেক সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহম্মেদ, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হাজী সেলিম হক রুমী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েমের নাম শোনা যাচ্ছে।
জানাগেছে, দীর্ঘ ১৪বছর পরে গত ১৫ জুন শনিবার সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজ প্রাঙ্গনে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ।
কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগদান করেছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিশেষ বক্তা হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু।
এছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম ফজলুল হক মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ- সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নান।
এর আগে ২০০৩ সালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক হন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এড. তৈমূর আলম খন্দকার ও সিনিয়র সহ-সভাপতি হন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও তৎকালীন সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন।
সর্বশেষ ২০০৯ সালে শহরের আলী আহমেদ চুনকা পাঠাগারে দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এড. তৈমুর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।