নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এবং তার পরিবারকে কেন্দ্র করে একটি মানিলন্ডারিং মামলার তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ উঠেছে, শামীম ওসমানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তার স্ত্রী মিসেস সালমা ওসমান এবং শ্যালক তানভীর আহমেদ মিলে প্রায় ১৯৩ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের সজেকা থানায় দুদকের বিভাগীয় কার্যালয়, খুলনার পরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখিত প্রধান আসামিরা হলেন মিসেস সালমা ওসমান (চেয়ারম্যান, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লি.), তানভীর আহমেদ (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লি.) এবং শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য)।
শামীম ওসমানের স্ত্রী মিসেস সালমা ওসমান এবং শ্যালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত কে টেলিকমিউনিকেশন্স লি. আন্তর্জাতিক কল আনয়ন ও সেবা রপ্তানির জন্য বিটিআরসির অনুমোদিত অপারেটর। ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ২৭৪.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের তথ্য দিলেও এর মধ্যে মাত্র ২২.৬৯ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ২৫১.৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৯৩.৯১ কোটি টাকা) বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শামীম ওসমানের প্রভাব এবং রাজনৈতিক অবস্থান কাজে লাগিয়ে তার স্ত্রী ও শ্যালক এই মানিলন্ডারিং কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লি. আন্তর্জাতিক কল ও সেবা রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এই অর্থ বাংলাদেশে ফেরত আনার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও তা লঙ্ঘন করা হয়। দুদকের দাবি, বৈদেশিক মুদ্রা পাচারে শামীম ওসমানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি সরাসরি এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেছেন।
উল্লেখ্য, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এবং দণ্ডবিধি অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের শাস্তি হতে পারে ১২ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড।