বিএনপির শক্তিশালী ও সুসংগঠিত সংগঠন। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মতন এত কঠিন আন্দোলন বাংলাদেশের কোথাও হয়নি। আমাদের দলের এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্র-জনতার মাধ্যমে যে আন্দোলন হয়েছে সেটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। দাবি করতে পারবো ইনশাল্লাহ সরকারের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের নতুন তৈরি করেছে। আমরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে কারো ভয় পাইনি, ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত সন্ত্রাসী শামীম ওসমান তার সন্তান ও ভাতিজাদের নিয়ে সেদিন ছাত্র-জনতা ও বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। কোথায় কোথায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করেছে অগ্নিসংযোগ করেছে এর সকল ভিডিও আমাদের কাছে আছে। তার নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে এগুলা হয়েছিল। বড় বড় কথা বলে আবারো সে বোরখা পরে পালিয়ে গেছেন। এদেরকে কোন অবস্থায় ছাড়া যাবে না। আর আমরা আইনও নিজের হাতে তুলে নেবো না। আমরা তাদের মতন আর কোন অপরাধমূলক কাজ করবো না। আমরা তাদেরকে ধরে আইনের কাছে সোপর্দ করব। চোখ কান খোলা রাখবেন তারা যেন আর কোন নতুন করে কোন ষড়যন্ত্র করতে না পারে। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় আপনারা পাহারা দিবেন। ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারসহ তার দোসরদের বিচার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত দুদদিনের অবস্থান কর্মসূচির প্রথমদিন বুধবার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডস্থ সিদ্ধিরগঞ্জ টাওয়ারের সামনে জেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সমস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচীতে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি’র সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও নাসিক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, সহ-সভাপতি এস এম আসলাম, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহম্মেদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক এড. আঃ বারী ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র এড. মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সোনারগাঁও পৌরসভা বিএনপিদর সভাপতি শাহ্ জালাল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মিয়া, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, জেলা কৃষক দলের সভাপতি ডা. শাহিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কায়সার রিফাত, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান, জেলা তাঁতী দলের সভাপতি এড. শুক্কুর মাহমুদসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিগত ১৬ বছরে এই স্বৈরাচারী সরকারের আমলে খুন, গুন ও নির্যাতনসহ এতটাই মিথ্যা মামলায় আসামি হয়েছি যে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তারপরও কিন্তু আমরা এই স্বৈরাচারী সরকারের কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় করি নাই। আমরা রাজপথে থেকেই তার মোকাবেলা করেছি। আন্দোলনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কিন্তু আমরা রাজপথে ছিলাম। আমাদের উপরে নির্বিচারে গুলি করা হয়েছে। আগুন সন্ত্রাস ও লুটপাট যারা করেছে তারা স্বৈরাচারীর লোকেরাই করেছে আমাদের কোন নেতাকর্মীরা সেখানে অংশগ্রহণ করে নাই। ৩-৪ তারিখ পুলিশকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই স্বৈরাচারী সরকারের মতো এমন পতন ইতিহাসে কখনো ঘটে নাই। শুধু প্রথমেই হয় নাই এই স্বৈরাচারীর সরকারের শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের কথা কিন্তু চিন্তা করে নাই। শুধু তার বোনকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন। এই নিষ্ঠুর ও নির্মম এ সরকারের পরিণতি ইতিহাস হয়ে থাকবে। এই পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সবাই নতুন করে মুক্তির পথ দেখেছে। অবশ্যই আমাদেরকে মনে রাখতে হবে।
গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, এই যে বিজয় এই বিজয় নিয়ে খুশি এখনই হওয়া যাবে না। এখনো কিন্তু স্বৈরাচাররা ষড়যন্ত্র করছে। কিভাবে তারা আমাদের এই বিজয়কে নস্যাৎ করতে পারে। কিভাবে তারা দেশে আবারও অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশে ফিরে আসতে পারে। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুবই বিচক্ষণ। তিনি তাদের ষড়যন্ত্রগুলোকে বিচক্ষণ করে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে রাজপথে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমাদেরকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজপথে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসরা যদি কোন কিছু করতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে। তাদেরকে আর ছাড় দেওয়া যাবে না। এই স্বৈরাচারী সরকার কিন্তু এমনিতেই স্বৈরাচার হয়নি তাকে তাদের দলের নেতা কর্মী সহ প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী তাদের স্বার্থ নিয়ে সহযোগিতা করে তাদেরকে স্বৈরাচারি বানিয়েছে। আমরা তাদেরকে জানি এবং তাদেরকে চিনি এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার রয়েছে আমরা বলবো তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন করে আর ষড়যন্ত্র করতে না পারে তার জন্য অন্তবর্তী কালীন সরকারকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদের ছাত্র ছাত্রীরা দীর্ঘ সময় আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে এই দেশবাসীকে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যাদের নিহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আহতদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আপনারা জানেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান একটা উপলব্ধি করেছিলেন ছাত্রদের ন্যায়ের সম্মত আন্দোলনে বিএনপি অবশ্যই তাদের সাথে রাজপথে থাকবে। ওনার নির্দেশে এই ছাত্র সমাজের আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে আমরাও এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। এ আন্দোলনের আমাদের বিএনপির অনেক নেতা কর্মী নিহত হয়েছেন আহত হয়েছেন হাজার হাজার।