জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের এক নেতা খেলা হবে বলে বোরকা পড়ে পালিয়ে গেছে। ৫ আগষ্ট বাংলাদেশের অধিকাংশ থানা ছিলো পুলিশ শুণ্য। শেখ হাসিনা পালায় না বলেও পালিয়ে গেছে। আসলে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। বিগত শাসক গোষ্ঠি নিজেদেরকে প্রভু ও আমাদেরকে প্রজা মনে করতো। অথচ আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তাদের সন্তান ও সংসারের খরচ চলতো। বিএনপি ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মানের রুপরেখার ৩১ দফা জনগণের কাছে উপস্থাপন ও ছাত্রদলের ৪৬’তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের রসুলবাগ এলাকায় আয়োজিত এক ছাত্রগণ জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মামুন মাহমুদ বলেন, এই বাংলাদেশ অনেকবার দিক হারিয়েছিল। একাত্তর থেকে পঁচাত্তর সময়কালে বাংলাদেশ তাঁর স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছিল। তখন বাংলাদেশ একটি দুর্ভিক্ষপিড়ীত বাংলাদেশে পরিনত হতে যাচ্ছিল। সেখান থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশে পরিণত করেছিলেন। দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল এই বাংলাদেশকে একটি দরিদ্র রাষ্ট্রে পরিনত করে রাখতে। কিন্তু শহীদ জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলের দায়িত্ব গ্রহণ করে এই বাংলাদেশকে আবার স্বৈরাচারমুক্ত করলেন। নয় বছর সংগ্রাম করে তিনি বাংলাদেশকে সঠিক জায়গায় নিয়ে এসেছিলেন। পরবর্তীতে এই বাংলাদেশকে খুনি হাসিনা আবারো গণতন্ত্রহীণতার মধ্যে ফেলে দিল। বাংলাদেশের মানুষকে অধিকার বঞ্চিত করতে শুরু করলো। আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, মামলার শিকার হয়েছে। কিন্তু কেউ রাজপথ ছেড়ে যায় নাই। গত জুলাই-অগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে খুনি হাসিনাকে পরাস্থ করে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। কাজেই আমরা বীরের জাতি, আমরা কখনো পরাজিত হই না। মাঝে মাঝে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে চায়, আমাদের সম্পদ তারা কুক্ষিগত করতে চায়। কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা বীরের জাতি, দেশপ্রেমিক জাতি। এই জাতিকে দীর্ঘদিন বিচ্যুত করে রাখা যায় না। আবার তারা সঠিক পথ খুজে বের করে সঠিক ধারায় নিয়ে আসে। আজকে বাংলাদেশ সঠিক ধারায় চলছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন দেয়া হচ্ছে। সেই সমর্থন নিয়ে ড. ইউনুছের সরকার দেশ পরিচালনা করছেন। তাঁরা একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ে কিছু সংস্কার করে একটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবে। যে নির্বাচনে গত ১৫ বছর আমরা ভোট দিতে পারি নাই, আগামী নির্বাচনে আমরা সবাই মিলে ভোট দিতে পারবো। আর সেই কারণেই আমরা ড. ইউনুছের সরকারকে সময় দিচ্ছি।
আগামী নির্বাচনের জন্য যেটুকু সংস্কারের প্রয়োজন, আপনারা সেটুকু সংস্কার করে একটি নির্বাচনের রুপরেখা ঘোষণা এবং একটি নির্বাচন ব্যবস্থার আয়োজন করেন। যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের সরকার নির্বাচন করতে পারে। পরবর্তীতে সেই নির্বাচিত সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করে জনগনের ভাগ্য উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারের কাজ করবে। যার যা কাজ, তাকে তা-ই মানায়। কোন কলা-কৌশল করে লাভ হবে না। জনগণ শেখ হাসিনাকে পরাস্থ করতে পেরেছে, আপনারাতো অনির্বাচিত সরকার। আপনাদের পাশে আমরা রয়েছি বলেই আপনারা শক্তিশালী।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, নাসিক ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী রিয়াজ উদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ফারহান, ৩নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফারহান রুবেল, ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা সুফিয়ান ভুইয়া ও রাকিব প্রমূখ।