নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে আজীবন ক্ষমতায় রাখবে বলেছিল এদেশের শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছিল শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার। স্বৈরাচারের পতনের সাথে সাথে তাদের ব্যবসায়ী বন্ধুদেরও পতন হয়েছে। ‘ষড়যন্ত্রকারীদের আপনারা সবাই চেনেন। তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সিদ্ধিরগঞ্জে ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজিত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, নৈরাজ্য ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
১০নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি আনিস সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জামাল প্রধানের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম,এ,হালিম জুয়েল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা কামাল, ডি,এইচ,বাবুল, এস,এম, আসলাম, রওশন আলী, মাসুদুজ্জামান মন্টু, নাসিক ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক আবুল হোসেন, কামরুল হাসান শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মমতাজ উদ্দিন মন্তুু, সাগর প্রধান, ১০নং ওর্য়াড বিএনপির সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জসিম মিয়া খোরশেদ আলম, আব্দুল রাজ্জাক, রেজাউল করিম, তাজুল ইসলাম, মামুন, মানিক, জুয়েল, সুহিন ও ৩নং ওর্য়াড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূইয়া প্রমূখ।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ওয়ান ইলিভেনের সময় চেম্বার অব কমার্সে যেসকল ব্যবসায়ীরা ছিল তারা সামরিক শাসনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তারা জরুরি অবস্থার আবেদন করেছিল। ব্যবসায়ীরা সেনাবাহিনীর ওপর ভর করে রাজনীতিবিদদের সাথে নির্মম ব্যবহার করেছিল। রাজনীতিবিদদের যখন জেলে নেয়া হচ্ছিল তারা তখন আনন্দ করছিল। শেখ হাসিনাকেও তারা সমর্থন দিয়েছিল। সরকারের সাথে থাকলে কীভাবে তাদের লাভ হবে সেটা তারা বিবেচনা করেছে।
৫ আগষ্ট যে সরকার পালিয়েছে এ সরকার ছিল এদেশের মানুষের দুশমন। দেশটাকে তারা লুটপাট করে খেয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা তারা একবারও চিন্তা করেনি। ৫ আগষ্ট বিজয় হয়েছে এদেশের সাধারণ মানুষের, জনগণের বিজয় হয়েছে। পরাজয় হয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার। দেশের সর্বস্তরের মানুষ সেদিন আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছে। আগষ্টের পর কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসেনি। অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এসময় যারা ষড়যন্ত্র করে তারা পালিয়ে গিয়ে নিজেদের কাপুরুষ প্রমাণ করেছে। কেন একটা নিরপেক্ষ সরকারের সময় তারা দেশে থাকল না। তাদের অপরাধের ভয়ে তারা পালিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার পতনে ব্যবসায়ীরা অনেক ব্যাথা পেয়েছে। আজ অর্ন্তর্বতীকালীন সরকারের ওপর তারা চেপে বসেছে। পরাজয়ের গ্লানি ঢাকতে তারা তৎপর হয়েছে। বিএনপি নেতাদের ডেকে তারা ঝুটের ব্যাবসা দেয়, পাটের ব্যাবসা দেয়। এগুলো তারা ভালবেসে দেয় না। আপনাকে ও আপনার দলকে ধ্বংস করার জন্য তারা এগুলো করছে। দলের ভেতর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা চেষ্টা করছে। মনে রাখতে হবে ব্যবসায়ীরা সবসময় নিজেদের স্বার্থ চেনে। নারায়ণগঞ্জের যে গডফাদার ছিল তার ভাইয়ের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো চলত। আজ সেখানে কারা। ওসমান পরিবারের যারা পদলেহন করত তারাই আজ সেখানে আছে। তারা ভাবছে কীভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রলোভন দেখিয়ে তারা প্রশাসনকে বুঝাতে চাচ্ছে এদের জন্য আমরা ব্যাবসা করতে পারছি না। এদের থেকে আপনাদের বেঁচে থাকতে হবে।
গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। পলাতক জীবন যাপন করেছি। ৫ আগষ্ট জনগণের আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে। তারা তিন তিনটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে। দিনের ভোট রাতে করেছে। জবরদখল করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। সেই শেখ হাসিনা গর্ব করে বলত, শেখের বেটি পালায় না। এত দাম্ভিকতা, সে কেন নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পালিয়ে গেল।