শেখ হাসিনা সাড়ে এগারো বছর ত্বকী হত্যার বিচারের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পূনরায় কাজ শুরু করলেও তাতে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয় নাই। ঘাতক ওসমান পরিবারের সকলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার দায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, বাহিনী এড়াতে পারে না। আমরা আগামী তিন মাসের মধ্যে ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমানসহ সকল ঘাতকদের অভিযোগপত্রের আওতায় এনে একটি নির্ভুল অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করার দাবি জানাচ্ছি।
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪৫ মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রাফিউর রাব্বি আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশে বিচার-ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে রেখে গেছে। তার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এখনো হয় নাই। শেখ হাসিনার সহযোগিতায় ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। সে মাফিয়াতন্ত্র এখনো বহাল রয়েছে। এখন তা বিএনপির দখলে।
বিএনপির লোকজন শামীম ওসমানের বহু লোকদের নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে। ওসমান পরিবারের ছত্রছায়ায় নীট কনসার্ন বিগত সরকারের সময়ে নারায়ণগঞ্জে লুটপাটের রাজত্বকায়েম করেছিল। এখন ওসমানদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে ফকির গ্রুপ।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরিবতর্কনের পরেও দেশে সকল ধর্মের, সকল মত ও পথের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাধা অপসারিত হয় নাই।
সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক শীবনাথ চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুর সুজন, বাসদ জেলা সংগঠক সেলিম মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা সংগঠক শওকত আলী ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।
দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম প্রশ্ন রেখে বলেন, ওসমার পরিবার পালিয়ে যায় কী ভাবে? শামীম ওসমানের নির্দেশে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের কাছ ত্বকী সহ সকর হত্যার বিচার চাই।
সমাবেশে বক্তারা নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, বুলু, মিঠুসহ ওসমান পরিবার দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যার বিচার দাবি করেন, সাংবাদিক সাগর-রুনী ও তনু হত্যার বিচার চান।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।