শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিলাসবহুল বাংলো জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রূপগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকদের মিলন মেলা সৎভাবে জীবনযাপন করার আহ্বান মেয়র আইভীর গাঁজা ও নকলসহ রূপগঞ্জে এইচ এস সি শিক্ষার্থী আটক সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোরগ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক শফিকের বিরুদ্ধে ১৫ সংগঠনের বিবৃতি নারায়ণগঞ্জে এনটিভির ২২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত বক্তৃতা করে কখনো কোনো আন্দোলন সফল হয়নি: গয়েশ্বর আ’লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ফাঁসির দাবিতে যুবলীগের মিছিল আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের মুল আসামিসহ গ্রেপ্তার ৪ সরকারী হাসপাতাল উপজেলা পর্যায়ে সাপের বিষ নিধনে এন্টিভেনম রয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মানববন্ধন ও মিছিল, বাজেট প্রত্যাখ্যান

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪
  • ২৩ Time View

প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমিকের রেশন, আবাসন, বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য বিশেষ বরাদ্দ অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। শুক্রবার (৭ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাজেটের পূর্বে এদেশের শ্রমিকরা বাজেটে এবং চিকিৎসার জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছিলেন। সরকার প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে সেখানে শ্রমিকদের সেই দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য সরকার বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোন বরাদ্দ রাখেনি। শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষার নিন্দা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন শ্রমিকরা দুস্থ নয় যে দুস্থ ভাতার বরাদ্দকে শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ বলে বিবেচনা করা হবে।

তারা বলেন, কোন খাতের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। তার উপরে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশ। যা শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তাহীন করছে অপুষ্টির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এই সংকটপূর্ণ সময়ে রেশন পাওয়া শ্রমিকের অধিকার। সরকার বাজেটে রেশনের জন্য কোন বরাদ্দ রাখেনি। সরকার বিভিন্ন জায়গায় ভুমিহীনদের জন্য আশ্রায়ন প্রকল্প করছে। কিন্তু শ্রমিকদের পক্ষে কি সংশ্লিষ্ট শিল্প এলাকা ব্যতিত সেই আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা সম্ভব? তাতে কি শিল্প পরিচালিত হবে? তাই শ্রমজীবীদের আবাসন নিশ্চয়তার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা শ্রমিকদের সুরক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রের শিল্পোন্নয়নের জন্যও জরুরি।

তারা আরো বলেন, আমরা দেখছি, সরকার চিকিৎসা উপকরণ আমদানির উপর দশ শতাংশ শূল্ক আরোপ করেছে, যা বেসরকারি খাতে চিকিৎসা ব্যায় বাড়াবে। আবার স্বাস্থ্য খাতে সেই অর্থে বরাদ্দ বাড়েনি। ফলে শ্রমজীবীরা আরো বেশি চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়লো। কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন এবং চাকরির সুযোগ সৃষ্টির দায়িত্ব যে মন্ত্রণালয়ের, শ্রমজীবী সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে বাজেট বরাদ্দে সেই মন্ত্রণালয়ের হওয়ার কথা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাজেটে দেখা গেল শ্রম ও কর্মসংস্থানের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রণালয়টি হল অবহেলিত মন্ত্রণালয়গুলির একটি। ফলে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কর্ম পরিবেশ ও শর্তের উন্নতির জন্য সরকার কতখানি আন্তরিক তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। বার্ধক্যে শ্রমিকের সুরক্ষা কিংবা কর্মসংস্থান এর জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ নেই। অথচ বাজেট বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের সবচেয়ে বড় অংশ আসবে ভ্যাট থেকে যার জোগান দেবে এদেশের শ্রমজীবী জনগণ।

তারা বলেন, সরকার বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে অথচ শ্রমিকের মজুরির বাৎসরিক বৃদ্ধি মাত্র পাঁচ শতাংশ অর্থাৎ সরকার ঘোষণা দিয়ে শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি, ক্রয় সক্ষমতা কমাচ্ছে। বিপরীতে সময় এবং যাতায়াত ব্যয় বাঁচাতে যোগাযোগের মাধ্যম যে মোবাইল ফোন তার খরচও সাত শতাংশ বাড়ছে। যে বিদেশি ঋণে তৈরি অবকাঠামো খুব কমই শ্রমজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজে লেগেছে সেই বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাজেটের সাতভাগের এক ভাগ খরচ হচ্ছে। তাই এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়, প্রস্তাবিত বাজেট শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভুমিকা রাখার পরিবর্তে, তাদের জীবনে বঞ্চনা আর কষ্টের পরিমাণ বাড়াবে। নেতৃবৃন্দ, শ্রমজীবীদের সাথে ধোঁকাবাজির এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করেন এবং শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তায় রেশন, স্বল্প ব্যয়ে আবাসন এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাজেটে বিশেষ থোক বরাদ্দ দেওয়ার জোর দাবি জানান। ঈদের আগে বেতন বোনাস পরিশোধের বিষয়ে বলেন নেতৃবৃন্দ বলেন, দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ ঈদ আসলেই কেবল ভাবতে পারে পরিবার পরিজনের জন্য কিছু ভাল খাবার ও কিছু জামা কাপড় কেনার। এমনিতেই শ্রমিকের মজুরি কম। তাই শ্রমিকরা ঈদের আগে অতিরিক্ত কাজ করে তাদের আয় বাড়ানোর জন্য। কিন্তু মালিকরা ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে কারখানাগুলোতে সংকট তৈরি করে। অধিকাংশ মালিকরা বোনাস না দিয়ে ৫০০/১০০০ টাকা বকশিশ দেয়। অনেক গার্মেন্টসে তাও দেয় না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেসিকের সমান বোনাস দেয়া হয়। অথচ যাদের উৎপাদনের কারণে দেশে বৈদেশিক মূদ্রা আসে তাদের ঠিকমতো বোনাস দেয়া হয় না। শ্রমিকদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পূর্ণ বোনাস দিতে হবে। ঈদের আগে শ্রমিকের চলতি বেতন পাওয়া ন্যায্য। শ্রমিকদের বেতন বোনাস ঈদের শেষ মুহুর্তে দিলে শ্রমিক বাড়ি যাওয়ার তাড়ায় ভালো করে কেনাকাটা করতে পারে না। শ্রমিকদের ঈদের আগে সময় থাকতে শ্রমিকের পূর্ণ বোনাস ও চলতি বেতনসহ সমস্ত বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে। বেতন বোনাস নিয়ে মালিকদের গড়িমসির কারণে শিল্প এলাকায় যদি শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হয় তার জন্য মালিক ও প্রশাসন দায়ী থাকবে।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সহসভাপতি হাসনাত কবীর, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Translate »