ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড এলাকায় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে সিদ্ধিরগঞ্জের ইউটার্ণ এলাকায়। এতে পুলিশ, পথচারী ও বিএনপির নেতা-কর্মীসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপির ১কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদেরকে স্থানীয় হাসপাতাল ও অজ্ঞাতস্থানে চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষ চলাকলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। অপরদিকে পুলিশ প্রায় অর্ধশতাধিক গুলি ছোঁড়ে বলে জানায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা। সংঘর্ষ চলার এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপির ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে বলে জানায় পুলিশ।
শনিবার সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সতর্ক পাহারায় অবস্থান নেয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সাথে স্থানগুলোতে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এবং সদর ও ফতুল্লা থানা পুলিশও অবস্থান নেয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের নেতৃত্বে বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীরা সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকাদিয়ে মহাসড়কে উঠার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পিছু হটে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। জবাবে পুলিশ বিএনপি নেতা-কর্মীদেরে ধাওয়া করে। এসময় পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে অর্ধশতাধিক গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। পুলিশ এসময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক এড আনোয়ার প্রধান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল সাগর প্রধানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়া বাকি ২ জনের নাম পরিচয় পুলিশ জানায়নি।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে সংঘর্ষ চলাকালে ইটের আঘাতে ও গুলিতে একজন বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে ২০ জন। সংঘর্ষ চলাকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা ইটের আঘাতে আহত হয়। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শাহেদ আহমেদ, নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা শামীম আলম সাজিদ, নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাফিন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদল সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান রাব্বি, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, ফতুল্লা থানা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক মোঃ রুহুল আমিন শিকদার, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক যুবায়ের আহমদ জিকু, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রাসেল রানা,ফতুল্লা থানা কৃষক দলের সভাপতি আমির হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপিসহ সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহমেদ, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ উল্লাহ, আড়াইহাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ, ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি মিঠুসহ বাকী আহতরা অজ্ঞাতস্থানে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করতে থাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শেষে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাংরোড ও হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে কয়েক দফা মিছিল করে। দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় এলাকায় এই মিছিল করে তারা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া’র নেতৃত্বে এই মিছিল হয়। এ সময় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী মিছিলে অংশ নেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বিএনপি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি করার চেষ্টা করেছিল। এসময় তাদেরকে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের হামলায় আমিসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।