সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া বড়বাড়ি পুকুর এলাকায় স্ত্রী-সন্তান ও স্ত্রীর বোনকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা বটি বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে বটিটি উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে ওই একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামাকাপড়ভরা একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি শাহীনুর আলম আরও বলেন, স্ত্রী লামিয়া আক্তার, ৪ বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ ও লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন একাই হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ইটাসুরকির নিচে চাপা দেয়। ১১ এপ্রিল দুপুরে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয় এবং ওই দিনই ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, ইয়াছিনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠালে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি একাই স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছেন। মাদকের টাকার জন্য ভাঙচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের দায়ের করা মামলায় ইয়াছিনকে পুলিশ ২৭ রমজান গ্রেপ্তার করে। ঈদুল ফিতরের ২ দিন আগে ইয়াছিন জামিনে ছাড়া পায়।
পুলিশ জানায়, ইয়াছিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার সন্তান আব্দুল্লাহ লাবীব ও বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে নিয়ে মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতে। ইয়াছিন জামিনে আসার পর গত ৮ এপ্রিল তার স্ত্রী বাসায় যান। এ সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় লামিয়ার বড় বোন মানসিক রোগী স্বপ্না আক্তার বটি নিয়ে তেড়ে আসে ইয়াছিনের দিকে। তখন ইয়াছিন স্বপ্নার কাছ থেকে বটি কেড়ে নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্বপ্না আক্তার এ সময় ডাক চিৎকার দিলে ইয়াছিন স্বপ্নাকেও কুপিয়ে গলা, হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে এবং শিশু আব্দুল্লাহর গলায় থাকা তাবিজের সুতা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর সে লাশ তিনটি বস্তায় ঢুকিয়ে রাস্তার। পাশে ইটাসুরকির নিচে চাপা দেয়। রক্তমাখা বটি বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেয় এবং তিনজনের রক্তমাখা জামাকাপড় একটি ব্যাগে ভরে ওই পুকুরে ফেলে দিয়ে ইয়াছিন ঠান্ডা মাথায় লামিয়ার বাসায় বসবাস করতে থাকে এবং ঘুরে ঘুরে লাশ চাপা দেওয়া স্থানে পর্যবেক্ষণে রাখে। পুলিশের কাছে ইয়াছিন আরও জানায়, ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।