নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার হাবিবপুর নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, আটক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সওজের জায়গায় ফুটপাতের দোকান থেকে চাঁদাবাজি, জমি দখল, বিভিন্ন ফ্যাক্টরির ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তাছাড়া বিচার সালিশের নামে তার নেতৃত্বে বাবুল, রাকিব, নিজামুদ্দিনের একটি সিন্ডিকেট লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়েছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ বারী বলেন, বিএনপি নেতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই বাছাই চলছে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, তাকে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী আটক করেছে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা আদালতে প্রেরণ করব। এরপর যাচাই-বাছাই করে দেখব তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণ করতে পারি কিনা।
আটক আতাউর সোনারগাঁওয়ের মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর আতাউর মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় অবস্থিত প্রায় ৩০টি দোকানে তালা লাগিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে প্রত্যেক দোকানির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের দোকান খুলে দেয়। এছাড়াও ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশের সড়ক ও জনপদের বিশাল জায়গা দখল করে ফলের দোকান বসিয়ে দোকান প্রতি ৫০০ টাকা করে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করে।
তাছাড়া গণপরিবহন নাফ, বোরাক ও ট্রাক স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পরিবহনে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে আসছে। এছাড়াও আতাউর, মোতালেব কমিশনারসহ বিএনপির একাধিক নেতা মেঘনা গ্রুপের মেঘনা ইকোনমিক জোন ও বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে দখলে নেয় এবং মালিকদেরকে ওয়েস্টেজসহ বিভিন্ন মালামাল দিতে নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ আছে।
এলাকাবাসী জানায়, দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা থাকার সুযোগে একের পর এক অপরাধ করে আসছিলেন বিএনপি নেতা আতাউর ও তার লোকজন। অন্যদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় আহত ও নিহতদের ঘটনায় মামলা দায়েরের আগে আসামি করার ভয় দেখিয়ে সোনারগাঁয়ের অনেক ব্যবসায়ী এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়ে সেনাবাহিনীর অফিসে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সেনাবাহিনী তাকে শনিবার গভীর রাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।