সিদ্ধিরগঞ্জে মঙ্গলাবার ভোরে কয়েকটি এলাকায় শতাধিক বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা ভাংচুর লুটপাট চালিয়েছে কিশোরগ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা। এসময় তাদের হামলায় কমপক্ষে দশজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সমর্থ হয়।
এলাকাবাসী ও প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, বিএনপি নেতা রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, গিয়াস উদ্দিন ও আনিস মিয়ার নেতৃত্বে শতাধিক কিশোরগ্যাংয়ের সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উত্তর রসুলবাগ এলাকায় হামলা চালায়। এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর চালিয়ে কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা নিমাইকাশারী ও বাঘমারা এলাকার মোজাম্মেল হক, মফিজ মিয়া, কামাল হোসেন, মোরতোজা আলী, মোস্তফা মিয়া, জালাল উদ্দিন, হাফিজ উদ্দিন, হাজী টাওয়ার ও মোজাম্মেল হকের মার্কেটের কমপক্ষে পনেরটি দোকানে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এসময় তাদের হামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের সভাপতি তৈয়ম হোসেন, সিজান মিয়া, বিল্লাল হোসেনসহ কমপক্ষে দশজন আহত হয়। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রতক্ষদর্শী উত্তর রসুলবাগ এলাকার বাসিন্দা জানান, লাতু মিয়া জানান, রিয়াজ উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন ও আনিস মিয়ার নেতৃত্বে শাতাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। এতে আমরা আতংকিত হয়ে পড়ি। আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জানালা ও সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে। ঘরের দরজা ভাঙ্গার জন্য তারা ধাঁড়ালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। আমাদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
আব্দুল মোতালিব মিয়া জানান, এলাকার চিহিৃত কিশোরগ্যাং ও মাদক ব্যবসায়ীরা রসুলবাগ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে তান্ডবলীলা চালায়েছে। এসময় যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই মারধর ও আহত করেছেন কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা।
সাজু ডেভেলপার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালাক শাহজাহান সাজু জানান, এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রভাব বিস্তারের জন্য উঠতি বয়সের কিশোরগ্যাং, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি সন্ত্রাসীবাহিনী গড়ে তুলেছেন। এ বাহিনী গত কয়েকমাস যাবৎ বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমি দখল, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটসহ পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রামরাজত্ব গড়ে তুলছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের সভাপতি তৈয়ম হোসেন জানান, সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে আমাদের কার্য্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এতে আমিসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হই।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাঘমারা এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন জানান, দলীয় নাম ব্যবহার করে যে সকল সন্ত্রাসীরা পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে তাদের কোনভাবেই ক্ষমা করা হবে না। দলের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন করতেই তারা বিএনপির নাম ব্যবহার করছেন। অবিলম্বে অপরাধীদের চিহিৃত করে গ্রেফতারের দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, গিয়াস উদ্দিন ও আনিস মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর আলম জানান, কিশোরগ্যাংয়ের হামলার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের সাথে চিহিৃত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।