ফতুল্লায় তালাবদ্ধ ঘরের ভেতর থেকে ভ্যান চালক হাবিবুর রহমানের বিকৃত লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। অপহৃরণের পর মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ার কারণে হাবিবুর রহমানকে হত্যাকরা হয়। হত্যাকান্ডে জড়িত এক নারীসহ অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- পটুয়াখালী জেলার সদর থানার মাদারবুনিয়ার মোঃ ইউসুফ আকনের পুত্র কবির ওরফে সগির হোসেন (৩৮), মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার হাতিমারার মজিদ আলী সৈয়ালের মেয়ে রেহেনা বেগম (২৫), নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর থানার চর ইসলামপুরের আসমত আলীর পুত্র আরিফ (২৫), মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার দানেছপুরের মৃত জলিল মিয়ার পুত্র সিদ্দিক (৫২) ও পটুয়াখালী জেলার সদর থানার হাজীখালা গ্রামের আব্দুল সাত্তার পেয়াদার পুত্র নুরুজ্জামান (৩৫)।
ফতুল্লা থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, গত ২৯ জানুয়ারী দুপুরে ফতুল্লার পঞ্চবটি শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে এক ব্যক্তির বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন রাতেই নিহত আজিজুল হক উদ্ধারকৃত লাশটি তার ছেলে হাবিবুর রহমানের (২১) বলে সনাক্ত করেন। এবং ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে ২৫ জানুয়ারী তিনি ফতুল্লা থানায় ছেলে নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরীতে তিনি উল্লেখ্য করেন ২৪ জানুয়ারী রাত ৮ টার দিকে হাবিবুর দাপা পোস্ট অফিসরোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে বের হয়। পরে রাত দশটার দিকে তার ফোনে কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় তার ছেলেকে হত্যা করা হবে। পুলিশ জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ সোমবার রাতে প্রথমে মুন্সিগঞ্জের হাতিমারা থেকে কবির ওরফে সগির হোসেন ও তার স্ত্রী রেহেনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ফতুল্লার শাসনগাও এলাকা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তর করে। আরিফের তথ্যমতে ঢাকার পোস্তগোলা থেকে সিদ্দিক এবং সিদ্দিকের তথ্য মতে ফতুল্লা দাপা ইদ্রাকপুর থেকে নিহতের সহযোগি নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সকলেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃত দম্পত্তি কবির ওরফে সগির হোসেন ও রেহেনা বেগম বিভিন্ন স্থানে ঘর ভাড়া নিয়ে মোবাইল ফোনে যুবক পুরুষদের সাথে সম্পর্ক করে বাসায় ডেকে এনে মুক্তিপণ আদায় করতো। এরই ধারাবাহিকতায় নিহত হাবিবুরের সহযোগি এবং গ্রেপ্তারকৃত কবির ওরফে সগিরের চাচাতো ভাই নুরুজ্জামানের মাধ্যমে নিহতের সাথে মোবাইল ফোনে শারীরিক মেলামেশার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে আনে। পরবর্তীতে মুক্তিপণ আদায়ে নিহতের পরিবারের কাছে অর্থ দাবী করে হাবিবুরকে নির্যাতন করে। হাবিবুর চিৎকার করলে অপর আসামীদের সহায়তায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরের ভেতর লাশ ফেলে তালাবদ্ধ করে তারা সকলে পালিয়ে যায়।