অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্যানিকেতন হাইস্কুল অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহা পদত্যাগ করেছেন। তবে ট্রাষ্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ভয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। পরে তাকে প্রথমে চাষাড়া বালুর মাঠে ইসলাম হাট ফাউন্ডেশনে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুুপুরে শহরের তুলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ভুইয়ারবাগ পশ্চিম দেওভোগ এলাকাস্থ স্কুলটিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীরা পায়ে হেটে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় আবদুস সালামের পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগন দেয় শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের অবগতি পত্র দেয়া হয়।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবগতি পত্রে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলের অবৈধ ট্রাস্ট্রি বোর্ড দ্রুত ভেঙ্গে দিতে হবে। বর্তমান তথাকথিত ট্রাষ্টি বোর্ডের সভাপতি কাশেম হুমায়ুন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। এতে আরও উল্লেখ করেন, এলাকাবাসীর অনুদানে স্থাপিত স্কুলটি চাঁদাবাজ কাশেম হুমায়ুন ও সালাম গংরা তাদের চাঁদাবাজের হাতিয়ার হিসেবে স্কুলটিকে ব্যবহার করে আসছ দীর্ঘদিনেএবং স্কুলের বেতন বৈষম্যের কারণে দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ এই স্কুলে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সাংবাদিক ভাইদের কাছে বিনীত অনুরোধ মানবিক আবেদনটি বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট প্রেরন করে এবং নিউজ করে স্কুলের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সহযোহিতা করবেন।
দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে শিক্ষাথীরা জানায়, প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে টিসি আনতে চাইলে টাকা দাবি করেন তিনি। প্রতি বছর ৪টি পরীক্ষার বদলে ৬টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ফলে পরীক্ষা ফি বাবদ অতিরিক্ত ৫০০-১০০০ টাকা দিতে হয়। স্কুলের কোন রকম প্রোগ্রাম হলে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক আটকে রাখা, টিফিন টাইমে ক্যান্টিনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রি করা হয়। ফলে অনেকে ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনে অনিহা প্রকাশ করে। একজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলে ৫০০ টাকা জরিমানা গুণতে হয়। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ফি ও বেতনের টাকা পরিশোধ না করলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয় না। পরীক্ষার ফি বাবদ ৫শ-৬শ টাকা আদায় করা হয় যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাছাড়া অভিভাবকদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও হয়রানি করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক কামরুন নাহার কাকলী বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। এর ফলশ্রুতিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। তবে ট্রাষ্ট বোর্ডের সহ সভাপতি সালাম সাহেব পদত্যাগ করেননি, তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ট্রাষ্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম অসুস্থ্য থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।