আজ থেকে সোনারগাঁওয়ে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৪। এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত এবারের উৎসবে দেশের প্রায় ১৭টি জেলার প্রতিথযশা ৬৪জন কারুশিল্পী তাদের শিল্পকর্ম নিয়ে উৎসবে অংশ নিয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উৎসব প্রাঙ্গণ খোলা থাকবে। উৎসবে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৫০টাকা। তবে বিকাল ৫টা থেকে উৎসবে কোন প্রকার ফি ছাড়াই প্রবেশ করা যাবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কাজী নূরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইমরুল চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নরুন নবী, নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন, ঢাকা রিজিয়ন এর টুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক, সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, সনমান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. ওসমান গনি, পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তৈয়বুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গাজী আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
মেলায় মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি ও মাটির পুতুল, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁও, টাঙ্গাইল ও ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশ বেতের কারুশিল্প, ঐতিহ্যবাহী জামদানি, কাঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া-পুতুল, বন্দরের রিকশা পেইটিং, কুমিল্লার, তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্প, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, বগুড়ার লোকজ খেলনা ও কুমিল্লার লোকজ বাদ্যযন্ত্রের শিল্প।
এছাড়া কারুপন্য তৈরির উদ্যোক্তা ও ব্যাবসায়ীদের জন্যও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বাহারি কারুপন্যের মোট ১০০টি স্টল। উৎসবে আগত দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আর্কষণ হিসেবে থাকছে, কারুশিল্প প্রদর্শনী, লোকজীবন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলা প্রদর্শনী। মাসব্যাপী লোকজ উৎসবের লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন দেশীয় লোক সংস্কৃতির জারি, সারি, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি, হাসনরাজার গান, মুর্শিদী গান, চর্যাগান, লোকগল্প বলা, লোকজনৃত্যসহ বিভিন্ন লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। লোকজ খেলার মাঠে থাকবে গ্রামীণ খেলা, লাঠিখেলা, ঘুড়ি ওড়ানো ইত্যাদি অনুষ্ঠান। উৎসবে লোকজ ঐতিহ্যের মুড়ি, মুড়কি, জিলাপি ও বাহারি পিঠাপুলিসহ নানা ধরনের মিষ্টান্ন স্থান পেয়েছে।১৯৯১ সাল থেকে নিয়মিতভাবে মাসব্যাপী এ লোকজ মেলার আয়োজন করে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। উৎসব চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।