সিদ্ধিরগঞ্জে জমি বায়না করার পর ঐ জমি অন্যত্র বিক্রির পায়তারার অভিযোগ উঠেছে এক প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। বছর দুয়েক পূর্বে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকার মুহাম্মদ হালিম মুন্সীর ছেলে মুহাম্মদ ইসহাক ও মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার মরহুম মনসুর আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম উক্ত জমি বায়না করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষ পুলিশের স্মরণাপন্ন হলে বিক্রেতাগণ গড়িমসি করছে মুহাম্মদ ইসহাক ও শফিকুল ইসলামের নামে করা বায়না বহাল রাখতে। পায়তারা করছে বায়নার টাকা আত্মসাত করতে। এ নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তোলপাড়। এলাকাবাসী ঐ প্রতারক চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বায়না সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকার মুহাম্মদ হালিম মুন্সীর ছেলে মুহাম্মদ ইসহাক ও মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার মরহুম মনসুর আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম বছর দুয়েক আগে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি মৌজার সিএস ও এসএ-৪৭৭ নং দাগে আরএস- ১৫৯৪ নং দাগে ১৫ শতাংশ জমি বায়না করেন। ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে উক্ত দুই গ্রহিতা যথাক্রমে স্টাম্প নং-খট-০৪০৫০০৩, ০৪০৫০০৫, ০৪০৫০০৬ নং ও খট ০৪০৫০৪৩, ০৪০৫০৪৪, ০৪০৫০৪৫ এবং খট- ০৪০৫০৪০, ০৪০৫০৪১, ০৪০৫০৪২ এর মাধ্যমে মরহুম নজুমদ্দিন ওরফে নজু মুদ্দিন নজর ওরফে নজর আলীর সন্তান আব্দুল জব্বার, দেলোয়ার হোসেন, নুর জাহান বেগম, সেফালী বেগম ওরফে মোসাঃ আলেছা বেগম, হাবিদা বেগম ওরফে মোসাঃ হামিদা বেগম, মোসাঃ মর্জিনা আক্তার, আক্তার বানু ওরফে মোসাঃ আতর বানু, মরহুম আনছর আলীর সন্তান মোসাঃ হাবেজা বেগম ওরফে মোসাঃ হাফেজা বেগম, মোসাঃ রহিমা আক্তার, মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, মোসাঃ হালিমা বেগম, আব্দুল সামাদ, আবুল হোসেন, মোসাঃ সেলিনা আক্তার, মুনছুর উদ্দিনের সন্তান রোকিয়া বেগম ওরফে রেকিয়া বেগম এবং মরহুম আব্বাস আলীর সন্তান হাবিবুর রহমান মিয়া, মাসকুদা আক্তার ওরফে মোরশেদা বেগম, নিলুফার ইয়াছমিন ওরফে মোসাঃ রাশিদা বেগম, মরহুম মোঃ হোসেন সাউদ রহিম ওরফে মোঃ আবুল হোসেনের সন্তান মোঃ রুবেল হোসেন, মোঃ মাসুম হোসেন, মোঃ শরীফ হোসেন, রুমা বেগম-এর নিকট থেকে ৪৫ শতাংশ জমি বায়না করেন। উক্ত জমিতে মামলা থাকায় বায়নার সময় বায়নাপত্র দলিলে উল্লেখ ছিলো যে, মামলা নিষ্পত্তি করে দাতাগণের নামে আরএস রেকর্ড মোতাবেক নামজারী করে সকল কাগজ ঠিক করে উক্ত জমি দলিল গ্রহিতাদ্বয়কে বুঝিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু মামলা চলাকালীন সময় সম্প্রতি দলিল দাতাগণ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে উক্ত জমি অন্যত্র বিক্রি করার পায়তারা করছে। এতে হতবাক হয়ে পড়ে দলিল গ্রহিতা মুহাম্মদ ইসহাক ও শফিকুল ইসলাম। খবর পেয়ে দলিল গ্রহিতা মুহাম্মদ ইসহাক ও শফিকুল ইসলাম তাদের কাছে এ প্রতারণার চেষ্টার কারণ জানতে চাইলে উক্ত দলিল দাতাগণ সদুত্তর না দিয়ে নানা রকম টালবাহানা করছে।
পরবর্তীতে দলিল গ্রহিতাদ্বয় এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের আশ্রয় নিয়ে দলিল করার সময় দলিল দাতাগণের অনুরোধেই স্টাম্পে স্বাক্ষরের সময় তোলা ছবি ও ভিডিও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে দেখালে পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করে প্রতারণার চেষ্টার সত্যতা পায়। পরবর্তীতে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে উভয়পক্ষকে স্বপক্ষের কাগজ-পত্র নিয়ে সমঝোতা করতে বললে দলিল দাতাগণ সমঝোতা করতে টালবাহানা করতে থাকে। এমনকি দলিল দাতাগণ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছে ভিন্ন ভিন্নভাবে বায়না করার পায়তারা করছে। এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা প্রতারক ঐ চক্রটিকে ইন্ধন দিচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, শান্ত জালকুড়ি এলাকায় প্রতারণা করে প্রতারক চক্রটি অশান্ত করার পায়তারা করছে। এ ঘটনায় তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।