বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ‘যদিও কোন প্রকার শঙ্কা অনুভব করছেন না তারপরও সকল প্রকার পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে’।
শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামন্ডপ পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন তিনি।
আইজিপি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোন প্রকার শঙ্কা অনুভব করছি না। তবে আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চাই না। সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি।’
‘নারায়ণগঞ্জ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি চমৎকার নিদর্শন’ উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যাতে তাদের শারদীয় দুর্গোৎসব স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারে সেজন্য সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত আছে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন পূজা মন্ডপ আমরা পরিদর্শন করি। এখন পর্যন্ত সবজায়গায় দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী দিনগুলোও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চমৎকারভাবে সবকিছু শেষ হবে বলে আশা করি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি যারা করার তারা করবে। কিন্তু জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত আছি। জনগণের জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষার জন্য যে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সেই ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত। কেউ যদি জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার হুমকির সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে।’
এ বছর সারাদেশে ৩৪ হাজার পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে জানিয়ে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতিবছরই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি থাকার কারণে পূজা মন্ডপের বৃদ্ধি পায়।
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজকে অশুভ শক্তি হাত থেকে রক্ষা করতে মা দুর্গা আসেন। এদেশ থেকেও অশুভ শক্তি বিনাশ যাক, শুভ শক্তি জয়ী হোক; এইটা আমরা চাই। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। উৎসবের আনন্দ আমরা সকলে ভাগাভাগি করতে চাই।
এ সময় ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কোন দুষ্কৃতিকারী যেন কোন সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য দুর্গাপূজার সময়টাতে আমরা খুবই সতর্ক থাকি। ধর্মীয় অনুভূতিকে পুজি করে রাজনৈতিক, সামাজিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা হয়। বর্তমান সময়ে রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।’
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অভয় দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের পক্ষে সরকার আছে। মুক্তিযুদ্ধে সকলেই সমহারে বাংলাদেশ নির্মাণে এগিয়ে এসেছিলেন। সকলেরই লাল রক্ত ধলেশ্বরী, বুড়িগঙ্গায় প্লাবিত হয়েছে। সুতরাং আমরা যারা সরকারি কর্মচারী আছি তারা আপনাদের ধর্মীয় উৎসবের সময় পাশে আছি।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমা প্রমুখ।