রূপগঞ্জের পূর্বাচল থেকে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ শিক্ষক আবদুল্যাহ আল মামুনের (৩৫) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বুধবার (২৩ আগস্ট) রাতে মামুনের বাবা আবুল কালাম বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মো. আবির হোসেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করছি। তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা, অথবা তিনি দূর্ঘটনায় মারা গেছেন নাকি অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন- এই তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে আমরা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুনের মৃত্যু রহস্যজনক। তার সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টে শরীরের বাইরে বা ভেতরে কোথাও আঘাতের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। যে কারণে তার মৃত্যুর বিষয়টি খুবই জটিল। তার মস্তিস্কে রক্ত ক্ষরণের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এমনও হতে পারে তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করে থাকতে পারেন। তবে তার পরিবারের অভিযোগকে আমলে নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি আগামি সাত থেকে দশদিনের মধ্যে মৃতদেহের ভিসেরা রিপোর্ট চলে আসবে। সেই রিপোর্ট পেলেই তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এর আগে বুধবার (২৩ আগস্ট) ভোরে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল এলাকায় ২০ নম্বর সেক্টরের কালনি এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে আব্দুল্লাহ আল মামুনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
খবর পেয়ে সকালে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে ।
স্বজনরা জানান, শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুনের বাড়ি ফেনী জেলার শশ্যদী থানার গজারিয়া গ্রামে। স্ত্রী মোরশেদা শারমিনকে নিয়ে তিনি ঢাকার দক্ষিণখান কাওনা বাজার এলাকায় শ্বশুরবাড়ির পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ভারতে পিএইচডি করার পর মামুন গত দুই বছর ধরে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক বিভাগে শিক্ষকতা করছিলেন। তার স্ত্রী মোরশেদা শারমিনও স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
মামুনের স্ত্রীর বড় ভাই মনির হোসেন জানান, মঙ্গলবার (২২ আগষ্ট) সকালে তিনি কর্মস্থলে যান। পরে নিজের চিকিৎসার প্রয়োজনে সেখান থেকে দুপুর বারোটার দিকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বের হন। ওই সময় স্ত্রী মোরশেদা শারমিনের সাথে তার শেষ কথা হয়। এরপর থেকে মামুনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং তিনি বাসায় ফিরে না আসায় রাতে তার স্ত্রী দক্ষিণখান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরিবারের দাবি, শিক্ষক মামুনের কারো সাথে কোন শত্রুতা ছিল না। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তারা।