শিশুবান্ধব নগরী গড়ার লক্ষ্যে খেলার মাঠ, পার্ক নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসনের খাস জমি ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা চেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এই অনুরোধ জানান।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর ভূঁয়সী প্রশংসা করেন নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। সারাদেশে উন্নয়ন কর্মকান্ডের বিবেচনায় আগামী নির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আইভী বলেন, ‘আপনার অর্থনৈতিক মুক্তির এই কার্যক্রম ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। অত্যন্ত বিচক্ষণার সাথে দেশকে একটি পর্যায়ে নিয়ে এসে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেভাবে আপনি আপনার অবস্থান তুলে ধরেছেন, পরাশক্তিকে যেভাবে মোকাবেলা করছেন তা একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে আপনাকে মানায়।’
‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পরাশক্তিকে আপনি বলেছেন, ‘প্রয়োজনে তোমার দেশে যাবো না, অন্য মহাদেশ খুঁজে বের করে নেবো।’ এইটা শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই আপনি বলতে পেরেছেন। আগামী নির্বাচনে আপনি পুনরায় নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমাদের নির্দেশনা দিবেন।’
টানা তিনবার নির্বাচিত নাসিক মেয়র আরও বলেন, ‘আপনার সাহসে সাহসী হয়ে, আপনাকে অনুকরণ করে নারায়ণগঞ্জের মতো একটি জায়গায় কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আপনি আমাকে ২০০৩ সালে নমিনেশন দিয়েছিলেন, তখন পৌরসভায় নির্বাচিত হয়েছিলাম।
২০১১ সালে গুরুত্ব বিবেচনা করে নারায়ণগঞ্জকে সিটি করপোরেশন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। আজ তিন বারের মতো নৌকা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে আপনার দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
স্থানীয় সরকারের সব পর্যায়ে মানবিক সহায়তা, উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামেরও প্রশংসা করেন তিনি।
আইভী বলেন, ‘জয় আমাদের সুনিশ্চিত। আগামীতেও তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।’
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের শেষাংশে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি নগরীতে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) শিশুবান্ধব নগরী গড়তে চান। অর্থ্যাৎ আপনি খেলার মাঠ, পার্ক, মানুষের হাঁটার জায়গা ও গণপরিসর চান। কিন্তু পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোতে সেইভাবে জায়গা না থাকায় এই নির্দেশ পালন করতে পারছি না।
জেলা প্রশাসকের কাছে প্রচুর অব্যবহৃত খাস জমি থাকে। নেত্রী আপনি একটা নির্দেশনা যদি দেন, ওই জমির মালিক হতে চাই না, আমরা শুধু ওই জায়গা ব্যবহার করবো এবং সেখানে আপনার নির্দেশ মোতাবেক কাজ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে, আমরা যে প্রকল্পই নেই না কেন আমাদের লোন হিসেবে নিতে হবে এবং দুই পার্সেন্ট ইন্টারেস্ট দিতে হবে। নতুন সিটি করপোরেশনগুলোর এইটা কোনভাবেই সম্ভব না।
আমার সিটি করপোরেশনের বয়স মাত্র ১১ বছর। আমাদের পক্ষে ৩০০ কোটি বা ৫০০ কোটি টাকা লোন নিয়ে ২ শতাংশ ইন্টারেস্ট দেওয়া সম্ভব না। আমাদের যেভাবে অনুদান দিচ্ছিলেন সেইভাবে করার অনুরোধ জানাই। আপনি একটু খেয়াল রাখবেন।’
অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পুরো বক্তব্য তার দিকে তাকিয়ে মনোযোগ দিয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্যে উল্লেখিত পয়েন্টগুলোও নোট করেন সরকারপ্রধান।