ফতুল্লার মাসদাইরে পুলিশ কর্মকর্তার উপর হামলা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ দোকানপাট-রেস্টুরেন্টে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
গত রোববার (২০ আগষ্ট) রাতে ফতুল্লা মডেল থানার সহ উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কামাল হোসেন বাদী হয়ে নেসার উদ্দিন গ্রুপের অনুসারী সাব্বির ওরফে চশমা সাব্বিরসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ জনকে আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তবে মামলায় আসামী করা হয়নি হামলার ঘটনার হোতা কিশোর গ্যাং নেতা নেসারকে।
এদিকে ওই ঘটনার পর গত রোববার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৯ জনকে আটক করেছে। তবে এই ঘটনায় অভিযুক্ত সাব্বিরকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মামলার এজাহারনামীয় ৮ আসামীরা হলেন সাব্বির ওরফে চশমরা সাব্বির (২৭), মো. হাসান মোল্লা (৩৫), মো. হোসেন (৩৪), মো. চঞ্চল (৩২), মো. সৌরভ (৩২), মশিউর রহমান রনি (৪২), বায়জিদ (২৬) ও রোহান (২৮)।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত শনিবার (১৯ আগষ্ট) রাতে শহরের মাসদাইর বেক অ্যান্ড বিনস রেস্টুরেন্টে এজাহারনামীয় ৮ আসামীসহ ৪৫-৫০ জন দুষ্কৃতিকারী দেশীয় অস্ত্র রাম দা, হকিস্টিক, লোহার রড, কাঠের ডাসাসহ এলাকায় ত্রাসের ও ভয়ভীতি সৃষ্টি করে। এসময় তারা যানবাহন ভাংচুর করে। ওই সময় পুলিশ লাইন্স থেকে সরকারি কাজ শেষে রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ্ আল মারুফকে উচ্ছৃঙ্খল আসামীরা হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে কোপ মেরে বাম হাতের কব্জির ওপরে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আসামীরা উচ্ছৃঙ্খলতা ও জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। আসামীরা ওই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে পথচারী নিরাপত্তা প্রহরী ভোলা মিয়া (৩৫) ও রিকশাচালক শিবলু মিয়াসহ (২৩) রেস্টুরেন্টে আসা ক্রেতাদের মারধর, ত্রাস সৃষ্টি ও ভাংচুর করে। তারা ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ অফিসে ভাংচুর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছবিসহ চেয়ার ভাংচুর ও টিনের চালা কোপায়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, পুলিশ ও এলাকার লোকজনের ওপর হামলা, ভাংচুরের অভিযোগে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম জানান, গত শনিবার রাতে হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এই ঘটনায় এজাহারনামীয় চার আসামী হাসান মোল্লা, হোসেন মোল্লা, চঞ্চল, সৌরভসহ ২৯ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে শহরের মাসদাইর এলাকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়, রেস্টুরেন্টেসহ ৮-১০টি দোকানে ভাংচুর করে একদল দুর্বৃত্ত। ওই হামলায় পুলিশের এসআই আব্দুল্লাহ্ আল মারুফসহ ৫ জন আহত হয়। নেসার উদ্দিন-সাব্বির গ্রুপের নেতৃত্বে এই হামলা ও ভাংচুর চালানো হয় বলে পুলিশ জানায়।