নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), নারায়ণগঞ্জ। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নিতাগঞ্জ মোড়ে আব্বাস টাওয়ারে নারায়ণগঞ্জ আটা ময়দা মিল মালিক সমিতির কার্যালয়ের এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ আটা ময়দা মিল মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব এম আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও ক্যাব, নারায়ণগঞ্জ’র জয়েন্ট সেক্রেটারি সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: সেলিমুজ্জামান, ক্যাব নারায়ণগঞ্জ’র সভাপতি মাজাহার হোসেন মাজুম, সাধারণ সম্পাদক কাজী দলিল উদ্দিন দুলাল, প্রচার সম্পাদক আবু সাঈদ পাটোয়ারী রাসেল, কার্যকরী সদসস্য রোকনুজ্জামান মিঠু, নিতাইগঞ্জ ব্যবসায়ি মালিক সমিতির সভাপতি শংকর সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা চাউল আড়ৎদার মালিক সমিতির সভাপতি শেখ নুরদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম লিটন, আটা ময়দা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল আলী, অর্থ সম্পাদক আব্দুর রব সিকদার, সদস্য দেলোয়ার হোসেন, পাইকারী খুচরা মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো: মোয়াজ্জেম হোসেন, চাল আড়ৎদার মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: মিজানুর রহমান ও আটা ময়দা মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: মোক্তার হোসেন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আগামীতে রমজান মাসজুড়ে নিতাইগঞ্জে ন্যায্যমূল্যের দোকানের প্রতি জোর দিয়েছেন ব্যবসায়িরা। তারা বলেছেন, ন্যয্যমূল্যে দোকান থেকে ক্রেতারা দোকানের দামের চেয়ে ১০ টাকা কমে পন্য পাবে। আমরা সেই ব্যবস্থা করবো। এই জন্য ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, ক্যাব ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
মতবিনিময় সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ক্যাব এর পক্ষ থেকে পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানানো হয়। বলা হয়, ১১ মাস যে যেভাবে ব্যবসা করেছেন, অন্তত রমজান মাসে লাভ একটু কম করে ন্যয্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। মানুষ খুব কস্টে আছে। বাজার অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের খেয়াল খুশিমত পণ্যের দাম বাড়িয়ে ব্যবসা করছে। এটা দু:খজনক। জরিমানা করা কোন সমাধান নয়। ব্যবসায়ীদের সচেতন হতে হবে।
আটা ময়দা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, রমজানে আটা ময়দার দাম বাড়েনি। কারণ রমজানে এর চাহিদা কম থাকে। কিন্তু আমরা মিল থেকে ২৭ টাকা থেকে ২৯ টাকায় আটা বিক্রি করি। অথচ খুচরা বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আটা-ময়দার কোন প্রকার ভেজাল করার সুযোগ নাই। যদি ভুট্টার মিশ্রন করি। তাহলে গমের চেয়ে ভুট্টার দাম বেশি। একজন ব্যবসায়ী কেন লস দিয়ে ভুট্টা মিশাবে। এটা বুঝার ভুল।
চাউল আড়ৎদার সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, চাউলের বাজার ঠিক রাখতে হলে মোকামে নজরদারি করতে হবে। যেখান থেকে আমরা পাইকারী চাল আনি সেখানে দাম নিয়ে নয়-ছয় করে। মেনিকেট চাল ৩১ টাকা কেজি দরে রশিদ দেয়। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে ৩৩ টাকা করে নেয়। টাকা পাঠানোর পর চাল পাঠায়। ফলে আমরা সমস্যায় পড়ি। কারণ আমরা ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে যদি আমাদের কাছে কেউ চাউল কেনার রশিদ দেখতে চায়। তখন দেখে রশিদে চাউলের কেজি ৩১ টাকা। মোটকথা আমরা দেশের প্রধান চাল ব্যবসায়িদের কাছে জিম্মি।
ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রমজান শুরু হওয়ার মিনিমাম ১০ দিন আগে ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করতে হবে। এবং সন্মিলিতভাবে বাজার মনিটরিংয়ে রাখলে বাজার স্থিতিশীল রাখা সম্ভব।