শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান খান-ডিবি হারুনসহ ৬৫ জনের নামে সিদ্ধিরগঞ্জে মামলা শেখ হাসিনা আর দেশে ফিরতে পারবেন না: মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু সিদ্ধিরগঞ্জে মানব কল্যাণ পরিষদের কম্বল বিতরণ শামিম ওসমান, সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপদ করেছিল: সাখাওয়াত সিদ্ধিরগঞ্জে বিকাশ ব্যবসায়ীর পৌনে ৩ লাখ টাকা ছিনতাই সিদ্ধিরগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহের সময় শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ বাণিজ্যমেলায় অ্যালুমিনিয়ামের স্টলে নারীদের ভিড় রূপগঞ্জে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত সাদপন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে ফতুল্লায় বিক্ষোভ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের দশ বছর পূর্তি আজ: রায় কার্যকর না হওয়ায় হতাশ নিহতদের স্বজনরা

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৬৬ Time View

দেশব্যাপী আলোচিত নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ১০ বছর পূর্ণ হলো আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল)। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ও হাইকোর্টে এ মামলাটির রায়ের পর পাঁচ বছর ধরে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে শুনানির অপেক্ষোয় থাকায় নিহত সাতটি পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। নিহতদের স্বজনরা এ আলোচিত মামলাটি সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে শুনানী শেষ করে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। এ বিষয়ে নিহতদের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

৭ খুন মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেঃ কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদানের আদেশ দেন। নিম্ন আদালতের পর উচ্চ আদালতে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ বহাল রেখে বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগে শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে। পাঁচ বছর ধরে মামলাটি আপিল বিভাগে শুনানীর অপেক্ষায় থাকায় নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবার সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। নিহতের সাতটি পরিবারের মধ্যে ৫টি পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে এখন অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

সাত খুনে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও একটি মামলার বাদিনী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, প্রথম দিকেই নি¤œ আদালতে ও উচ্চ আদালতে মামলাটির রায় দ্রুতভাবেই হয়েছিল। এখন মামলাটির কোন অগ্রগতি দেখছি না। আমরা অনিশ্চিয়তার মধ্যে রয়েছি। আমরা এ মামলাটির বিচার পাব কিনা তাও জানি না। মামলাটি সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে এখনো ঝুলে আছে। এ দেশে কত মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। বিচার বিভাগের কাছে দাবি দেশব্যাপী আলোচিত এ সাত খুন মামলাটি যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এতটুকু চাওয়া যাতে সাত পরিবারের তাকিয়ে হলেও মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করেন। আমরা সাতজনকে হারিয়েছি। তাদেরকেতো আর ফিরে পাব না। আমরা যেন এ নৃশংস হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচারটি পাই। আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি। তিনি বলেন, সাত খুনে সাতটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এদের মধ্যে ৫টি পরিবার এখন চরম অর্থকষ্টে দিনাদিপাত করছে।

নিহত তাজুল ইসলামের পিতা আবুল খায়ের বলেন, তিন বছরের মধ্যে নি¤œ আদালতে ও উচ্চ আদালতে সাত খুন মামলাটি দ্রুত রায় হয়েছে। এরপর সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে পাঁচ বছর ধরে মামলাটি ঝুলে আছে। এখন মামলার বাদি হলো সরকার। আমরাতো আর কিছুই করতে পারছি না। এখন যা কিছু করার সরকারকেই করতে হবে। এটা এখন সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। তারপরও আমরা অপেক্ষায় আছি। অপেক্ষার প্রহর ঘুনতে ঘুনতে দশটি বছর পার করেছি। জানিনা আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে। রায়টি আমরা জীবিত থাকতেই দেখে যেতে পারব কিনা তাও জানিনা। আমরা এ মামলাটি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় মধ্যে আছি। দ্রুত সাত খুন মামলাটির বিচারকার্য শেষ করে আসামীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করবে এই আশায় এখনো বেঁচে আছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, মামলাটি প্রথম থেকে আসামী পক্ষ প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল। এ সব অবস্থার পরও বিচারকি আদালতে যে রায় পেয়েছিলাম সেই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আসামী পক্ষ হাইকোর্টে আপীল করার পরও আমরা যে রায় পেয়েছিলাম সেই রায়েও আমরা সন্তুষ্ট। নিহতদের পরিবার ও আমরা চেয়েছিলাম এ রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর হোক। কিন্তু আসামীরা এতোই প্রভাবশালী যে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে থাকা মামলাটি তারা বিভিন্নভাবে বিলম্বিত করে সুবিধা নিতে চেষ্টা করছে। আমরা চাই আপীল বিভাগে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হোক এবং দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক ।

সাত খুনে নিহতরা হলেননারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবি চন্দন সরকার, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, স্বপনের গাড়ির চালক জাহাঙ্গীর, নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন ও চন্দন সরকারের গাড়ি চালক ইব্রাহিম।

উলে¬খ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্ল¬ার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবি চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ৬ জন ও ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের শান্তিরচর এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল¬া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
Translate »