নারায়ণগঞ্জ জেলায় সর্বমোট ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭১ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হবে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের টিকা। যার মধ্যে জেলার ৫টি উপজেলায় ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ১,২৩,৭১৮জন এবং কমিউনিটিতে কিশোরীর সংখ্যা ৯,৭৭৩জন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণীর প্রায় ৩৭ হাজার ৫০০ জন শিক্ষার্থী ও কমিউনিটি পর্যায়ে ১০ বছর থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার জন কিশোরীদের মধ্যে টিকা প্রদান করা হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ কর্মদিবসে স্কুলে পর্যায়ে এবং ৪ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৮ কর্মদিবসে স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রে এই টিকা প্রদান করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহম্মদ মুশিউর রহমানের সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অনীক বিশ্বাস ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আফরোজা আক্তার পলি। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্যশিক্ষা কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ’র সঞ্চালনায় সভায় প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্ভিল্যান্স এন্ড ইম্যুনাইজেশন মেডিকেল অফিসার মোর্শেদুল ইসলাম খান।
জেলা ইপিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট লুৎফর রহমানের তত্ত্বাবধানে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জুনিয়র স্বাস্থ্যশিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাকির হোসেন, সিসিটি, মো. আনোয়ার হোসেন ও সহকারি ষ্টোর কিপার শওকত জামান প্রমুখ।
অপরদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নাসিকের মেডিকেল অফিসার ডা: শেখ মোস্তফা আলী।
এসময় প্রেসেন্টেশন উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল ইপিআই স্পেশালিষ্ট ডা: ফারহানা রহমান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈশি^কভাবে সাধারণত নারীরা যেসকল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তার মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার চতুর্থ সর্বোচ্চ। প্রতি বছর বিশে^ ছয় লাখ নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন যার মধ্যে তিন লাখ মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশী নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে প্রতি লাখে অন্তত ১১ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতি বছর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী। জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিডি টিকা বিশ্বব্যাপী পরিক্ষীত, নিরাপদ ও কার্যকর। এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই। বিশে^র ১৬৫টি দেশে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিডি টিকা দেয়া হচ্ছে। ২০১৪-১৫ সালে দেশের গাজীপুর সিটি করপোরেশনে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই টিকার কার্যক্রম চালু হয়েছে।