আমরা যারা দুর্নীতি করি, তারা বেশি বেশি কথা বলি, বিভিন্নজনকে উপদেশ দিই। এজন্য আমাদের কথা কেউ শোনে না। আবার দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপী, ঘুষখোরদেরকেই আমরা বেশি সম্মান করি। এতে তারা দুর্নীতি-অনিয়মে আরো উৎসাহ পায়। বিশ্বের অন্য কোথাও এমনটি নেই। জনগণকে এদেশের মালিকানা দেওয়া হয়েছে। তাই আপনারা যারা সাধারণ জনগণ, তারা দুর্নীতিবাজকে সরাসরি দুর্নীতিবাজ বলতে শিখুন। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল ১০টা থেকে দুপুর সোয়া একটা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজারে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুদক আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ ধনী এলাকা, এখানে প্রভাবশালীর সংখ্যা বেশি। আর প্রভাবশালীরাই বেশি দুর্নীতি করে। এখানে যারা অভিযোগ দিবেন তাদের যেন কোনো প্রকার হয়রানি করা না হয়। আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব দুদকের। প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে দুদকের জেলা কার্যালয় যেন অত্যন্ত কঠোর থাকে।
দুদক কমিশনার বলেন, যিনি দুদকের কাছে কমপ্লেইন করবে তাকে যেন সম্মান দেওয়া হয়, হেনস্ত না করা হয়। দুদকে কমপ্লেইন করলে সে ব্যক্তিকে যদি কেউ হেনস্থা করে তাহলে দুদক তাকে ছাড়বে না। কোনো অভিযোগ দাতা যদি হেনস্তার শিকার হয় তাহলে উনি সঙ্গে সঙ্গে যেনো আমাদের হেড অফিসে জানায়। নারায়ণগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের বলছি যিনি অভিযোগ দিলেন তাদের খোঁজখবর নিবেন, তাদেরকে প্রটেকশন দিবেন। আপনারা দদুকে কমপ্লেন করেছেন তিন দিন বা সাত দিনের ভিতরে যদি তার ফলাফল না পান তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে জানাবেন। দুর্নীতি দমন কমিশনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আছে এবং থাকবে, কাউকে ছাড় দেবে না।
অন্যায্য অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না জানিয়ে দুদক কমিশনার আরো বলেন, ‘অনেকেই এসে অভিযোগ করেন, আমার জমি অধিগ্রহণ করা হলেও সরকার আমাকে টাকা দিচ্ছে না। পরে খতিয়ে দেখা যায়, তার জমির খাজনা, খতিয়ান, নামজারি কিছুই ঠিক নেই। তাহলে অফিসার তাকে কীভাবে টাকা দিবেন! কেউ হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে অভিযোগ দায়ের করবেন না। কেউ অন্যায্য অভিযোগ দিলে দুদক সেটি গ্রহণ করবে না। দুদককে অনেকেই অনেক শক্তিশালী মনে কিরেন। কিন্তু আইনের নির্ধারিত গণ্ডির বাইরে দুদক যেতে পারবে না।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মোঃ আক্তার হোসেন, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিভাগীয় কার্যালয়, ঢাকার পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, নারায়ণগঞ্জ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাজহার হোসেন মাজুম। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় নারায়ণগঞ্জে’র উপ-পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনীসহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।