নদীর পশ্চিম পাড় থেকে এখানে আসার কথা না। আমি এ অঞ্চলের ভোটারও না। বিবেকের তাড়নায় এসেছি আমরা। তিনজন মুক্তিযোদ্ধা আমার সামনে, তিনজনই আমার বড় ভাই। এখন ৮ তারিখে প্রমাণিত হবে এ অঞ্চলটা বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন মিনি পাকিস্তান হবে না বাংলাদেশে থাকবে-এর জন্যেই আমি এসেছি। এ অঞ্চলকে ১৯৭১ সনে যারা রক্তে রঞ্জিত করেছে। ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষা নদীতে হাজার হাজার লাশ ভাসিয়ে দিয়েছে, যাদের সহযোগিতায় তাদের সন্তানরা আজকে মিনি পাকিস্তান বানানোর চিন্তা করছে। আমরা কিন্তু তাদের সকল অপকর্মের সবকথা জানি। শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় বন্দর উপজেলা নির্বাচনে বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদের পক্ষে নির্বাচনী সভায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ রশিদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু সহ আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
তিনি বলেন, অনেকে আবার টাকার গাট্টি নিয়ে নেমেছেন। বলে বেড়ান অনেককেই নাকি পারচেজ করেছেন। ৮ তারিখে দেখব মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি পরাজিত হয় কিনা। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যদি পরাজিত হয়, আমাদের কোন ক্ষতি হবে না। ক্ষতি হবে এই অঞ্চলের। কারণ এ অঞ্চলটা হয়ে যাবে মিনি পাকিস্তান।
এড. খোকন সাহা বলেন, মনে রাখবেন এ নির্বাচন ৭১ সালের চেয়েও ভয়াবহ নির্বাচন। রাজাকারের বংশ বিস্তার অনেক বড় হয়ে গেছে। কলা কাছ থেকে বটগাছ, বট গাছ থেকে জোড়া বটগাছে রূপান্তরিত হয়েছে। আর কিন্তু হতে দেওয়া যায় না। এতদিন ওরা মুছাপুরটাকে মিনি পাকিস্তান বানিয়ে দিয়েছিল। এবার ওরা চায় পুরো বন্দর উপজেলাটাকে পাকিস্তান বানাতে। কি দেখলাম দুই দিক থেকে দুই রাজাকারের বংশধর। তারা নাকি সবাইকে বলে আমরা রাজাকারের বংশধর, আর বলে রাজাকাররাই বন্দরে প্রতিষ্ঠিত হবে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ লজ্জার কথা শুনে ছুটে আসলাম আপনাদের কাছে।
তিনি আরও বলেন, এমপি ও মন্ত্রী সাহেবরা নির্বাচনে আসতে পারে না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগিয়েছিলেন আমাদের প্রয়াত নেতা, এ জেলার সবচেয়ে সৎ রাজনীতিবিদ জননেতা একেএম শামসুজ্জোহা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। নাসিম ওসমান বাংলাদেশ আসলেন এবং জাতীয় পার্টিতে যোগদান করলেন। কেন জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেছেন, সেটির নীতির বক্তব্যে আপনারা বুঝে নিবেন। উনি এসে বন্দরের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। এরপর সেলিম ভাই এই অঞ্চলে উন্নয়নের দায়িত্ব¡ নিয়েছেন। সেলিম ভাই যে উন্নয়ন করেছে তার জন্য তার একজন সহযোগী দরকার। তাদের সহযোগী কে হবেন? মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী শক্তি? নাকি বিরোধী শক্তি? আপনারাই নির্ধারণ করবেন। শুধু আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ বন্দর উপজেলাটাকে মিনি পাকিস্তান বানাবেন না। ওরা মুক্তিযোদ্ধাকে চ্যালেঞ্জ করে রাজাকারের সন্তান হিসেবে দাঁড়াবে। বয়স হয়নি তাই মুক্তিযুদ্ধ করতে পারেনি কিন্তু আমি দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। মুক্তিযুদ্ধে চেতনাকে লালন করে আমি আজীবন বেঁচে থাকবো।
প্রসঙ্গত: বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বতর্মান চেযারম্যান এম রশিদ দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।