নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় রাষ্ট্রীয় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু বঙ্গমাতা বাড়ি ও বাচ্চা সামলানো, বঙ্গবন্ধুকে সাহস যোগানো, কর্মীদের আপ্যায়ন থেকে শুরু সবকিছুই তিনি করতেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লেও তার ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পাই। উনি একজন সাহসী নারী ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) বিকেলে সিটি করপোরেশনের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেশিরভাগ সময়ই জেলে থাকতেন। তখন পুরো সংসারের দায়িত্বভার তার উপর ছিল। ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধেও তার বিশেষ অবদান ছিল। আগের দিনে যারা রাজনীতি করতেন তারা এতই সৎ ছিলেন যে তাদের বাড়িঘরে গেলে চিড়া, মুড়ি, গুড় এইসব দিয়েই আপ্যায়ন করা হতো। এখনকার রাজনীতিবিদদের বাড়িঘরে তো কর্মীরা যেতেই পারে না। অথচ ওই সময় চিড়া, মুড়ি, পান্তাভাত খেয়েই মানুষের জন্য, জনকল্যানে তারা কাজ করতেন।
আইভী বলেন, আমাদের ন্যায্যতার জন্য লড়াই করেছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর ডাকে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন বাংলার সকল মানুষ একত্রিত হয়ে। বঙ্গবন্ধুর পাশে বঙ্গমাতা ছিলেন বলেই তিনি অনেক কাজ সহজে করতে পেরেছেন। আমরা বিরোধীতার জন্যই কেবল বিরোধীতা করি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু পরিবারের অবদান কতটুকু সেইটা যদি একবার চিন্তা করি তাহলে তাদের জন্য আমাদের দোয়া করতে হবে।
মেয়র আইভী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই দেশটিকে সুন্দরভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। হ্যা, অনেক ভুল-ত্রুটি থাকবে, বিরোধীরা সমালোচনা করবে, এইটাই স্বাভাবিক কিন্তু বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এইটাকে অস্বীকার করা যাবে না। আমরা আর আগের অবস্থানে নাই। আমরা পাকিস্তানের চেয়েও ভালো অবস্থানে আছি। পাকিস্তানে বর্তমানে খাদ্যের অভাব, বিভিন্ন সেক্টরে বিশৃঙ্খলা; সবদিক দিয়ে মিলিয়ে চিন্তা করলে আমরা বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, অনেকটা দুঃসাহসের সাথে এই বাংলাদেশকে পরিচালনা করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন কোন জায়গা নাই, যেখানে নারীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা তিনি রাখেননি। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, চাকরি, পুলিশ, আর্মিসহ সব জায়গায় নারীদের সুযোগ বৃদ্ধি করেছেন তিনি। এমনকি পাহাড়িদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ করে দিয়েছেন। বিনামূল্যে বই, মার্তৃত্বভাতা, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা দেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার করা হয়েছে। সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এইটা অস্বীকার করা যাবে না। অনেককিছুর দাম বেড়েছে, এইটা সত্য। কিন্তু এইটা তো সারা পৃথিবীতেই বেড়েছে। খবরে দেখলাম, ভারতেও সবজির দাম বেড়েছে। যদিও ভারতে প্রচুর টমেটো উৎপন্ন হয়। সেই টমেটোর দামও অনেক বেশি বেড়েছে। এমন কোন দেশ নেই যেখানে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ, নির্বাহী প্রকৌশলী আজগর হোসেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী, কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, রুহুল আমিন, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, শাওন অংকন, মনোয়ারা বেগম প্রমুখ।