আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ক্লাব থাকবে। সেখানে অন্তত চর্চা হবে। তারা দেখবে সেখানে আইনস্টাইন কী বানিয়েছে, জামাল নজরুলের আবিষ্কার সেখানে থাকবে, জাফর ইকবালের জীবনী সেখানে থাকবে। প্রতিটি স্কুলে এদের কেন্দ্র করে রুম ডেডিকেটেড করতে হবে। যে এরা আমাদের পূর্ব পুরুষ। সোমবার (৬ মে) নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুলে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ ইউনুছ ফারুকী, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফজলুল হক রুমন রেজা প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমরা সন্তানদের ভাবনার জগৎ তৈরি করে দিচ্ছি না। আমরা মোবাইলে ব্যস্ত। কিন্তু মোবাইল কে আবিষ্কার করল তা চিন্তা করি না। আমরা ভাবি না এটা কীভাবে কাজ করে। আমরা ল্যাপটপ ব্যবহার করি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মাঝে এটা জাগাতে পারি না যে কীভাবে এটা কাজ করছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের এগুলো শেখাতে পারছি না। মেকানিজমটা কী সেটা পড়াতে পারছি না আমরা। আমাদের শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্নটা জাগিয়ে তোলাই এই বিজ্ঞান মেলার উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, আইনস্টাইন ও নিউটন আমাদের মত মানুষ ছিল। আমাদের দেশের জাহিদ হাসান একজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী। আমাদের দেশে অনেক বিজ্ঞানী আছেন। ড. জাফর ইকবাল কত মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছেন। যিনি কয়েক লক্ষ ডলার পেতেন বাইরের যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু তিনি কয়েক হাজার টাকা বেতনে আমাদের এখানে এসে চাকরি করছেন।
জামাল নজরুলকে স্টিফেন হকিং অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী বলেছিলেন। তিনিও কয়েক লক্ষ টাকার বেতন ফেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। আমাদের দেশের জন্য এমন টান থাকতে হবে। আমার পরিচিত একজন আছে সে কানাডা থাকে, বলল অনেক সুখে আছে। আমি বললাম সুখ কী। পরিবার ছেড়ে এত দূরে থাকা কী সুখ। একেক জনের কাছে সুখের সংজ্ঞা একেক রকম।
মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, শিক্ষক যদি দায়িত্ব ভালভাবে পালন করতে পারে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তুলতে পারে তাহলে আপনি জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন। আমরা হাজার হাজার শিক্ষক আছি। কিন্তু আমরা দেখি শিক্ষার্থীরা বাংলা পড়তে পারে না। ক্লাস টেনের ছেলে ইংরেজী পড়তে পারে না। একটা সহজ সমীকরন সলিউশন করতে পারে না তারা। এটা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের শতভাগ শিক্ষার্থীরা যেন বাংলা, ইংরেজী পড়তে পারে ও গনিতের বেসিক আইডিয়া থাকে এটাই আমাদের লক্ষ্য হবে।
তিনি বলেন, আমরা কেউ এর দায় এড়াতে পারি না। ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদরা জীবন দিয়েছে। আর আজ আমাদের ক্লাস থ্রী, ফোরের বাচ্চারা বাংলা পড়তে পারে না। আমাদের শিক্ষকদের ভাবতে হবে কীভাবে শেখানো যায়। শিক্ষকদেরও পড়তে হবে।