আইভী তিনবার সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ায় তার অহমিকা বেড়ে গেছে। আইভী অহংকারী হয়ে গেছে, তাই যা মন চায় তাই করছে। ঘুঘু দেখেছো, ফাঁদ দেখো নাই। ডিআইটি মসজিদ তার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে গেছে। আইভী এখন চাচ্ছে মসজিদগুলো দখলে নিয়ে তার মতাবলম্বীদের আস্তানা গড়ে দিতে। আমরা আমাদের আকিদা নিয়ে থাকবো, তোমার আকিদা নিয়ে তোমরা থাকো। আমাদের আকিদা বিশ্বাস নিয়ে তুমি কেন টানাটানি করছো। আমার মিলাদ করি না কারণ আজ পর্যন্ত কোনো ওলামায়ে ক্বেরাম এর প্রমান করতে পারে নাই। আমরা না করলে তোমার কী। তুমি চাচ্ছো মসজিদগুলো দখল করে তোমার বেদাতী মৌলবিদের আস্তানা গড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছো। মামলা আমরাও করবো, আদালত তোমার বাবার না, এটা জণগনের। আমাদের লোকেদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার জন্য তোমার বিরুদ্ধে মামলা করবো। পৌরসভার কোটি কোটি টাকা চুরি করা হচ্ছে। তোমরা চুরি করে আমাদেরকে চোর বলছো। ওলামাদের বিরুদ্ধে জুলুম করলে আল্লাহ আইভীর ক্ষমতা টিকিয়ে রাখবে না। তোমরা চোখ রাঙালে আমরাও চোখ রাঙাবো। যাদের সহযোগিতা করার করো, আমাদের নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাদ আছর নগরীর ডিআইটি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর ও নারায়ণগঞ্জ উলামা পরিষদের সভাপতি ডিআইটি মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়াল এসব কথা বলেন। মহানগর উলামা পরিষদের সভাপতি ও হেফাজত নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মামলার করার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন উলামা পরিষদ।
মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, দুই মাস আগে ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ মসজিদে এশার নামাজ চলাকালে রাসেল পার্কের ভেতরে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে বিকট শব্দে গানবাজনা করা হচ্ছিল। ওই সময় নামাজ শেষে মুসল্লিরা গিয়ে সেখানে ভাঙচুর করলে পুলিশ সেখানে যায়। এবং পরিস্থিতি শান্ত করে। পরদিন সিটি করপোরেশনের দুইজন লোক আমাদের কাছে এসে কিছু তথ্য নেয় ওই ঘটনায়। আমর বলেছি, ঘটনার সাথে উচ্ছৃশংখল জনতা কেউ ছিল না। ছিল মসজিদের মুসুল্লি। এসময় আমিসহ মসজিদ কমিটির সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। আমরা মনে করেছি বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। সেই ঘটনার দুই মাস পর এখন সিটি করপোরেশন মামলা করেছে। তাতে হেফাজত নেতা ফেরদৌসুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে; অথচ তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে ছিলেন না। সুনামগঞ্জে একটা মাহফিলে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মুসলিম একটা চেতনা আছে। অনেক যুবক ভাইয়েরা অনেক সময় তারা পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ে। কিন্তু যখন ইসলামের উপর কোন কটাক্ত আসে, নবীজীর উপরে, আল্লাহ পাকের উপরে এবং এই ধরনের উচ্ছৃংখল ও অশ্লীল কার্যকলাপ হয়, তখন তারা প্রতিবাদ মুখী হতে দেরি করে না। এটাই আমাদের দেশে ইসলামিক কালচার। তার পরদিন আমাদের একজন সদস্যকে ডেকে মেয়র আইভীর ভাই উজ্জল বলেছেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে হুজুরকে বলবেন জুমআর নামাজে এটা নিয়ে যেন কোন কথা না বলেন এবং এটা নিয়ে আর যেন বাড়াবাড়ি না হয়। পরদিন পেপারেও দেখা গেছে তারা বলছেন তারা (পার্কে অনুষ্ঠান আয়োজক) অনুতপ্ত, ক্ষমা চেয়েছেন, এমন উচ্চস্বরে গান বাজানো ঠিক হয়নি। এখানেই শেষ। এরপর এ নিয়ে আর কোন কথা হয়নি। আমি জুমআর নামাজেও এ নিয়ে আর কথা বলিনি।
কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দেখলাম মেয়র আইভীর আইন কর্মকর্তাকে দিয়ে মাওলানা ফেরদাউসকে চুরির মামলায় আসামী করে ওনারা মামলা করেছে। এটা শোনার পর স্বাভাবিকভাবে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। এখন মনে হচ্ছে, এতোদিন ওনারা আমাদের ঘুমে রেখে মামলার করে মামলার মাধ্যমে আমাদেকে শায়েস্তা করবেন। আমাদের একজন সদস্যকে মেয়র আইভী বলেছেন, রোজার পরে আমি মামলা করবো। যারা হামলা করেছে, ভাংচুর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে। আমি দেখিয়ে দিবো। এবং মসজিদের সামনে এই দোকানগুলি ভেঙ্গে দিবো। এখানে হেফাজতি, সন্ত্রাসী লোক থাকে। তাদেরকে নাকি আমরা লালন-পালন করি। তাদের মাধ্যমে পার্কে ঘটনাটি ঘটিয়েছি। আমি মনে করেছিলাম তিনি কথাগুলো নন অফিসিয়ালি বলেছেন।
হুশিয়ারী উচ্চারন করে তিনি বলেন, আজ এই দোকান বা জায়গার যে টাকা আসছে, সেগুলো আমার বা কমিটির পকেটে যাচ্ছে না। মসজিদের উন্নয়নের কাজে লাগছে। চাইলে আমাদের হিসাব দেখতে পারেন। মসজিদের জায়গা ভাঙতে আসলে লাশ পড়ে যাবে। তুমি (আইভী) তোমার কাজ করছো, আমাদের আমার কাজ করতে দাও। ঘাড়ে চেপে বসলে, আমরা জীবন থাকতে তোমাদের ছেড়ে দেবো না। প্রয়োজনে আমরা আরও বৃহত্তর সম্মেলনের ডাক দেবো।
মহানগর উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, আমরা আগে জানতাম না কিন্তু পরে খবর নিয়ে জেনেছি এখানে (শেখ রাসেল পার্কে) মিনি পতিতালয় হয়ে আছে। আমি এই মামলা নিয়ে ভয় পাই না, আমি সংবাদ সম্মেলনে এসেছি একটা মেসেজ দিতে। রাজনীতিতে মেয়র আইভীর জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় চলে গেছে। কয়েকজন ঠিকাদার ছাড়া তার আশে-পাশে কেউ ঘুরে না। এজন্য তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কিছুদিন এরে গালি দেয়, কিছুদিন ওরে গালি দেয়, তিনি আসলে আলোচনায় থাকতে চান।
এছাড়া পার্কের ভেতরে অপকর্ম চলে দাবি করে মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, মেয়র আইভী এখানে চারুকলার ভেতরে পার্ক করলেন, তারপর এখন রেস্টুরেন্ট বানিয়েছেন। এরই মধ্যে এখানে মিনি পতিতালয় শুরু হয়ে গেছে। এখানে নারী-পুরুষরা অবাধে মেলামেলা করছে, যা আশপাশের কয়েকটি মসজিদের মাঝখানে। এটা নারায়ণগঞ্জে মানুষ কোনোভাবেই সহ্য করবে না।